• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ছাত্রীর জানাজায় এসে গণপিটুনির শিকার প্রধান শিক্ষক


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৩, ০৮:২২ পিএম
ছাত্রীর জানাজায় এসে গণপিটুনির শিকার প্রধান শিক্ষক

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জিনিয়া খাতুন নামের এক স্কুলছাত্রীর জানাজায় অংশ নিতে এসে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন কুমারখালীর কয়া সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বিশ্বাস।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জিনিয়া খাতুন কয়া সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী এবং ওই গ্রামের জিল্লুর শেখের মেয়ে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৭ আগস্ট) বিদ্যালয়ের ছাদে বসে পাঁচ ছাত্রীর ধূমপানের দৃশ্য ফোনে ভিডিও করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মসিউর রহমান লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান। ভিডিও করার পর ওই ছাত্রীদের ডেকে বকাঝকা করা হয় এবং ভিডিও অভিভাবকদের দেখানো হয়। এ ছাড়া ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান ওই শিক্ষক। পরে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি এসে ভয়ে এবং অভিমানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন জিনিয়া। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এদিকে স্কুলছাত্রী জিনিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। নিজ গ্রামে জিনিয়ার লাশের জানাজার আগে অভিযুক্ত শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তার স্বজন ও এলাকাবাসী। এ সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক জিনিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে শিক্ষকদের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উপস্থিত জনতা চড়াও হয়ে প্রধান শিক্ষককে গণপিটুনি দেন।

পরে কুমারখালী থানা পুলিশ এসে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর হাত থেকে প্রধান শিক্ষককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু বলেন, “ছাত্রীদের ধুমপানের দৃশ্য দেখার পর তাদের ডেকে শুধু ব্যাগগুলো রেখে দেওয়া হয়। তাদের বলা হয়, অভিভাবকদের ডেকে তারপর ব্যাগ ফেরত দেওয়া হবে। ধুমপানের দৃশ্য কেউ ভিডিও করেনি। যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়।”
একই কথা বলেছেন অভিযুক্ত অপর শিক্ষক ওয়ালিউর রহমান।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ বিশ্বাস বলেন, “ঘটনার সময় আমি বিদ্যালয়ের বাইরে ছিলাম। একজনের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পারি। বিষয়টি নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে তাদের বাড়িতে গেলে গ্রামবাসী আমার ওপর চড়াও হয়।”

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, “মরদেহ নিয়ে মানববন্ধনের সময় গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!