• ঢাকা
  • সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২, ১৪ জ্বিলকদ, ১৪৪৪

সহকারী অধ্যাপককে পেটালেন অধ্যক্ষ


পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০৫:৪৬ পিএম
সহকারী অধ্যাপককে পেটালেন অধ্যক্ষ

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপককে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর ভগ্নিপতি হওয়ার সুবাদে একের পর এক প্রভাব বিস্তারসহ চাকরিবিধি পরিপন্থী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালী এই অধ্যক্ষ এমন অভিযোগ শিক্ষকসহ ভুক্তভোগীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষকদের সকাল ১০টার মধ্যে কলেজে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বাংলা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহ অধ্যক্ষের কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে যান। এরই মধ্যে অধ্যক্ষ ওই শিক্ষককে দেরিতে আসার জন্য খাতায় অনুপস্থিত দেখান।

এসময় রহমত উল্লাহ অধ্যক্ষকে বলেন, “বাড়িতে সমস্যা ছিল আর সড়কে যানজটও ছিল। আমার নৈমিত্তিক ছুটি পাওনা আছে, আমি ছুটির দরখাস্ত দিতে চাই। না হলে আজকের জন্য খাতায় স্বাক্ষর করতে দেন। একথা শোনার পর অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।”

শিক্ষক রহমত উল্লাহ একপর্যায়ে অধ্যক্ষকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে যান। এসময় অধ্যক্ষ উত্তেজিত হয়ে রহমত উল্লাহকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এতে মাটিতে পড়ে গেলে তাকে লাথিও মারেন। একপর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে তিনজন শিক্ষক ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।

ভুক্তভোগী সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, “অধ্যক্ষ মাঝেমাঝেই শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর আগে গত ১২ জুন এবং ২০১৭ সালেও আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। দেরিতে আসার জন্য অনুপস্থিত না করে ছুটির দরখাস্ত দিতে চেয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। অশালীন ভাষাই শুধু নয়, উনি আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত করেছেন। অধ্যক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আমিসহ অন্য শিক্ষকরা তার অন্যায় আচরণের বিচার পান না।”

বিষয়টি জানতে অধ্যক্ষ রবিউল আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে বিশ্বস্ত সূত্র জানা যায়, তিনি ঘটনাটি ঘটানোর পর প্রভাবশালী লোকজন নিয়ে মীমাংসা বৈঠক করছিলেন।

বিষয়টি জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “শিক্ষক অনিয়ম করলে চাকরিবিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষ ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু শিক্ষককে মারধর করা ভীষণ অন্যায়। এই অন্যায়ের জন্য অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে আমি এখনও জানি না। খোঁজখবর নিয়ে দেখব।”

 

Link copied!