• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

কলাপাতায় খাবার খেয়ে ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন


গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৩, ০৪:১৫ পিএম
কলাপাতায় খাবার খেয়ে ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন

খাওতা পার্টি আসছে, রান্নাঘর কাঁপছে, খাবো খাবো খাবো রে, কোরমা পোলাও খাবোরে। খাওতা পার্টির কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে। এভাবেই স্লোগান নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কলাপাতায় খাবার খেয়ে ঈদ উদযাপন করেন গোপালগঞ্জ সদরের গোবরা ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্রামের হাজারো মানুষ। এলাকাবাসী বলছেন পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে তাদের এমন আয়োজন। আর এভাবেই তারা ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ধরে রেখেছেন বছরের পর বছর।

এলাকাবাসী জানায়, ঈদের নামাজ শেষে দল বেঁধে বৃদ্ধ, যুবক, কিশোর আর শিশুরা স্লোগান নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কলাপাতায় খাবার খেয়ে ঈদ উদযাপন করেন। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি গিয়ে খান বিভিন্ন ধরনের খাবার। এ যেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এ রেওয়াজ প্রায় দুই শ বছরের। তবে এসব খাবার খাওয়ার সময় প্লেট, গ্লাস বা চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা থাকে না। মাটিতে বসে হাতে হাতে কলাপাতায় সেমাই, পোলাও, মাংস ও মিষ্টি নিয়ে খাওয়া হয়। এতে একদিকে যেমন গ্রামের সবার মধ্যে বেড়েছে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহনশীলতা তেমনি বেড়েছে সবার প্রতি সবার ভালোবাসা।

নওশাদ মুন্সি নামের এক বৃদ্ধ বলেন, “প্রায় দুই শ বছর ধরে আমরা এভাবে ঈদ উদযাপন করে আসছি। প্রতিটি বাড়ি বাড়ি স্লোগান নিয়ে গিয়ে আমরা বিভিন্ন খাবার খেয়ে থাকি। এতে আমাদের সবার মধ্যে যেমন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে, তেমনি সবার প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা বাড়ে।”

রওশন নামের এক যুবক বলেন, “আমরা ছোটবেলা থেকেই এভাবে দেখে এসেছি। আমাদের গ্রামে সবাই মিলে এভাবে ঈদ উদযাপন করে আসছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কলাপাতায় খাবার খেয়ে থাকি। এটা আমাদের ঐতিহ্য। আগামীতেও আমরা এ ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করব।”

এলাকাবাসী ইকবাল হাসান বেনু বলেন, “আমরা প্রতিবছরই এ ধরনের আয়োজন করে থাকি। কর্মব্যস্ততার কারণে গ্রামের অনেক মানুষ বাইরে থাকে। ঈদের সময় সবাই একত্র হই। এরপর ঈদের নামাজ শেষে আমরা দল বেঁধে স্লোগান নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কলাপাতায় খাবার খেয়ে থাকি।”

এ বিষয়ে গোবরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চৌধুরী শফিকুল রহমান টুটুল বলেন, “গোবরা ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী একটি গ্রাম ভাটিয়াপাড়া গ্রাম। এখানকার মানুষেরা তাদের সৌহার্দ্য সম্প্রীতি ধরে রাখার জন্য প্রায় দুই শ বছর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কলাপাতায় খাবার খেয়ে থাকেন। যে যতটুকু সামর্থ্য আছে, সেভাবে দেন এবং তারা সেটা ভাগ করে খান। এটি অনেক বড় একটি ঐতিহ্য।”

Link copied!