সাতক্ষীরায় ঘেরে লবণ পানি তোলার লক্ষ্যে বেড়িবাঁধে স্থাপিত অবৈধ ‘নাইন্টি পাইপ’ ও ‘বাক্সকল’ অপসারণ না করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূল রক্ষা বাঁধ।
উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর ও কাঠামারির মাঝখানে এমনই একটি বাক্সকল ভেঙে নদীর পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই এলাকার নূর ইসলামের মৎস্যঘেরের বাক্সকল ভেঙে ১৫ ফুট এলাকা বেড়িবাঁধের তলার মাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে যত্রতত্র ছিদ্র করে পাইপ ও বাক্স কল বসিয়ে বেড়িবাঁধ দুর্বল করে দিয়েছে ঘের মালিক ও লবণ পানি ব্যবসায়ীরা। তারা মূলত ঘের মালিকদের কাছে নদীর লবণ পানি বিক্রির জন্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে এসব বাক্স স্থাপন করেন। কৈখালী ইউনিয়নজুড়ে অন্তত ২০টি স্থানে বাক্স কল বসিয়ে পানি উত্তোলন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধ।
স্থানীয় আব্দুর রহিম ও কালাম গাজী বলেন, বাক্সকলের কারণে কিছু কিছু এলাকায় সিঅ্যান্ডবির রাস্তাও দেবে গেছে। অন্যদিকে কিছু স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের দুপাশ ভাঙনের কবলে পড়েছে। সরকার বেড়িবাঁধ রক্ষার্থে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পাউবোর অবহেলায় তা পানিতে যাচ্ছে। অনিরাপদ হয়ে পড়ছে জনজীবন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাক্সকলের মাধ্যমে নদীর পানি ঘেরে বিক্রি করে সংশ্লিষ্টদের বার্ষিক আয় প্রায় ২ কোটি টাকা। অভিযোগ আছে এই টাকার ভাগ পেয়ে থাকেন পাউবোর নিচু তলা থেকে ওপরতলার কর্মকর্তারা। এজন্য বেড়িবাঁধ রক্ষায় বাক্সকল অপসারণে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও পাউবো এক প্রকার নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।
কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, “শনিবার কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর ও কাঠামারির মাঝখানে বাক্সকল ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে যাই এবং লোকজন দিয়ে আপাতত সংস্কার করেছি। তবে এরকম আরও কয়েকটি বাক্সকল আছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকেনো মুহূর্তে এসব বাক্সকল ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বাক্স কলগুলো অপসারণ করতে হবে। যত্রতত্র বেড়িবাঁধ ছিদ্র করতে দেওয়া যাবে না।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও জাকির হোসেন বলেন, “আমরা দ্রুত ভাঙনকবলিত এলাকা সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছি। বাক্স অপসারণ উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে।”