বৈঠক শেষে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ-গোলাগুলি


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ০৫:৫৬ পিএম
বৈঠক শেষে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ-গোলাগুলি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় বিএনপির সার্চ কমিটির বৈঠককে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। 

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে উপজেলা ধরমপুর ইউনিয়নের গোঘাট সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- একপক্ষের বিএনপি কর্মী হামিদুল ও আরিফ। অপর পক্ষের বিএনপি কর্মী টিপু মেকার। তাদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সমন্বয়ে ওয়ার্ড কমিটির ভোটার লিস্ট গঠনের প্রস্তুতি চলছিল। এই বৈঠক রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে। বৈঠক শেষ হলে নেতাকর্মীরা যে যার মতো চলে যায়। ঠিক এ সময় হঠাৎ গোলাগুলির শব্দে চারদিকে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বিএনপির দুইটি গ্রুপ দুই দিকে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, “মঙ্গলবার বিকেল থেকে সার্চ কমিটির মিটিং চলছিল। মিটিংয়ের প্রস্তাবনা শেষে আমরা যে যার মতো চলে যাচ্ছিলাম। ঠিক এ সময় সার্চ কমিটির সদস্য শামসুলের নির্দেশে রাজন, স্বপন, কিবরিয়া, লিমন, টিপু আমাদের কর্মীদের ওপর গুলি করে। এতে আমাদের দুই কর্মী আরিফের মাথায় ও হামিদুলের ডান হাতের কনুইতে গুলি লাগে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।” 

অপরদিকে ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সদস্য শামসুল বলেন, “আমি ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হওয়ার কারণেই আজকের এই নাটক শুরু করেছে। সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে আজকের এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। মিটিং শেষে আমি চলে আসার পরেই এসব ঘটেছে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ওরা মূলত আমাকে ও আমার ছেলে রাজনকে টার্গেট করেছে।” 

তিনি আরও বলেন, “আজকের এই ঘটনা মিঠু, রবিউল সরকার ও ধরমপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক নান্টুর নেতৃত্বে ঘটেছে। এ সময় লালন, শুকুর, জিয়া, নিশান এরা মারামারিতে অংশগ্রহণ করেছে। তারা কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব আকাশের বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে।” 

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ড. পল্লব বলেন, দুজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। একজন মাথায় আঘাত পেয়েছে; সেটা গুলির কোনো আঘাত নয়। অপরজন হাতের কনুইতে আঘাত পেয়েছে। সেটা গুলির আঘাত কিনা তা পরামর্শ করে বলতে পারব।” 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, “উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের গোহাট সংলগ্ন এলাকায় বিএনপি সার্চ কমিটির বৈঠককে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছিল। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সাহায্য করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।”

তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!