• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২, ২৯ সফর ১৪৪৬

সীমান্তে ফের গোলাগুলি, রাত জেগে পাহারায় স্থানীয়রা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪, ০৬:২৮ পিএম
সীমান্তে ফের গোলাগুলি, রাত জেগে পাহারায় স্থানীয়রা

মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেশ কয়েকদিন ধরে আবার প্রকট হয়ে উঠেছে। দেশটির জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মির মধ্যে প্রায়-ই ঘটছে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ। এমন অবস্থায় সেই দেশের মানুষের পাশাপাশি আতঙ্কে রয়েছেন দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে বসবাসকারী মানুষেরা।

গত ২২ জানুয়ারি থেকে সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাইশফাঁড়ি চাকমা পল্লীর বাসিন্দা উচাইয়ং তঞ্চঙ্গ্যা জানান, প্রতিনিয়ত সীমান্তের ওপারের গোলাগুলির আওয়াজ এপারের এলাকাতে ভেসে আসে। এতে চরম অস্থিরতা কাজ করে তাদের মাঝে।

সীমান্তবর্তী আরেক এলাকা হেডম্যান পাড়ার হেডম্যান খাইনচাপু তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রভাব পড়ছে এপারের মানুষের ওপর। তারা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে বসবাস করছে। বাধ্য হয়ে অনেককে এলাকা ছাড়তে হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ফিরে আসে।

মংকিছা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, এমন পরিস্থিতিতে এলাকায় তাদের বসবাস অযোগ্য হয়ে উঠেছে। কখন কী হয়ে যায় সেই ভয়ে দিন পার করছেন তারা।

হেডম্যান পাড়ার প্রধান (কারবারি) ক্ল্যাচিং তঞ্চঙ্গ্যা জানান, কয়েকদিন ধরে তারা নিজেদের অনিরাপদ মনে করছেন। কিছুক্ষণ পরপর গুলির শব্দ তাদের কানে বেজে ওঠে। নিরাপত্তাহীনতায় স্কুলপড়ুয়া সন্তানেদের আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে এসেছেন। এখন তারা নিয়মিত রাতে পাহারা বসান। প্রতি পরিবার থেকে রাতে একজন করে জেগে থাকেন, যাতে রাতে ওপার থেকে ছোড়া গুলি এসে তাদের বাসাবাড়িতে পড়া শুরু করলে দ্রুত সবাইকে জাগিয়ে দিয়ে বাঁচাতে পারেন। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। বিভিন্ন রাজ্য দখল করে নিচ্ছে বিদ্রোহীরা।

জানা যায়, ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তের ওপারের জান্তা বাহিনীর অধিকাংশ ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন জান্তা বাহিনীর হাতে আছে তুমব্রু সীমান্ত ঘেঁষা মাত্র দুটি ক্যাম্প। সেগুলো হলো ৩৪ পিলার রাইট ক্যাম্প ও ঢেকিবুনিয়া ক্যাম্প। এই ক্যাম্পগুলো দখলের চেষ্টায় জান্তার সঙ্গে মুখোমুখি হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ হচ্ছে আরাকান আর্মির। ফলে এপারে আতঙ্ক আর উদ্বেগ বাড়ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, “ওপারে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে এপারে গুলির আওয়াজে স্থানীয়দের কিছু কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে সেখানে বিজিবি তৎপর রয়েছে, যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হয়।”

স্থানীয়দের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ইউএনও বলেন, “এখনো সরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যদি এরকম কোনো পরিস্থিতি হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Link copied!