জলবায়ু ন্যায্যতা ও কার্বন নিঃসরণের হার কমানোর দাবিতে সাতক্ষীরায় সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা শহরে বেসরকারি সংস্থা বারসিক এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের উদ্যোগে এই সাইকেল র্যালি বের হয়।
‘সাইক্লিং ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ স্লোগানকে সামনে রেখে র্যালিটি সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সামনে থেকে বের হয়ে পুরাতন সাতক্ষীরা, পোস্ট অফিস মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, নিউ মার্কেট ও তুফান কোম্পানির মোড় হয়ে শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের সামনে এসে শেষ হয়।
র্যালিতে অংশগ্রহণকারী যুবারা ‘জলবায়ু সুবিচার এখনই দরকার’, ‘উপকূলের কান্না শুনতে কি পাও না’, ‘কার্বন ডাই-অক্সাইডের বসবাস আমাদের সর্বনাশ’, ‘উপকূলের চিৎকার, চাই জলবায়ু সুবিচার’, ‘একটাই পৃথিবী, একটাই সুযোগ’, ‘আমরা দায়ী নই, তবে কেন ভুক্তভোগী’, ‘কার্বন নিঃসরণ কমাও, আমাদের বাঁচতে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড বুকে ঝুলিয়ে সাতক্ষীরা শহর প্রদক্ষিণ করেন। একই সঙ্গে তারা কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর প্রতি লাল কার্ড প্রদর্শন করেন।
এর আগে সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে র্যালিটি উদ্বোধন করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী আবু আফফান রোজ বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন উদীচী জেলা সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান ও ভাস্কর সুরেশ পান্ডে। বক্তব্য দেন শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সভাপতি হাবিবুল হাসান ও বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সংগীতশিল্পী আবু আফফান রোজ বাবু বলেন, “বাতাসে বাড়ছে কার্বন। বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাম নগর উপকূলের মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কিন্তু এর জন্য পৃথিবীর উন্নত ও অধিকহারে কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো দায়ী। অবশ্যই তাদের এই দায় নিতে হবে এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে হবে।”
উদীচীর জেলা সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের চারদিকে নানা সংকট তৈরি হচ্ছে। চাকচিক্যে ও ভোগবিসালের জীবনযাপনের অভ্যস্ততায় আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ। বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণবৈচিত্র্য, জলাভূমিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ। এগুলো রক্ষা করতে হবে। আমাদের পরিবেশ আমাদেরই সংরক্ষণ করতে হবে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের মূল প্রভাবক কার্বন নিঃসরণের হার অবশ্যই কমাতে হবে।”
ভাস্কর সুরেশ পান্ডে বলেন, “যুবসমাজের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমরা মানুষের কাছে পরিবেশ রক্ষার আওয়াজটা পৌঁছে দিতে চাই। আমরা যেন বৃক্ষ নিধন না করি। আমরা যেন জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হই। তাহলেই পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে।”
তরুণ জলবায়ু কর্মী মুশফিকুর রহমান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারা বিশ্ব আজ আক্রান্ত। এর মধ্যে উপকূলীয় এলাকার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এর জন্য ধনী দেশগুলো সবচেয়ে বেশি দায়ী, দায়ী তাদের ভোগবিলাসি জীবনযাপন। তারাই অধিক কার্বন নিঃসরণ করছে। তাদের অবশ্যই কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।”