পাবনার পদ্মা নদীর অবৈধ বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীতে ছাত্রলীগ কর্মী তাফসির আহমেদ মনাকে (২৪) হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৩টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত তাফসির আহমেদ মনা উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রুপপুর পাকারাস্তা মোড় এলাকার তাইজুর রহমান তুহিনের ছেলে। তিনি পাকশী ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
গ্রেপ্তাররা হলেন ঈশ্বরদীর নতুন রুপপুর গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে মানিক হোসেন (৩৬), সাহাপুর ইউনিয়নের দিয়ার সাহাপুর গ্রামের মুহিদুল হকের ছেলে ফসিউল আলম অনিক (২৭), নতুন রূপপুরের রূপপুরপাড়া এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে চমন রহমান (৩৮), চর সাহাপুর গ্রামের আক্তার সরদারের ছেলে শাহিন সরদার (২৮), নতুন রুপপুর গ্রামের আজিজ প্রামাণিকের ছেলে রাজিব প্রামানিক (৩০), চররুপপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩২), সলিমপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে আমজাদ হোসেন অবুঝ (৩৭), চররুপপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম (৩৪) এবং লক্ষীকুণ্ডা গ্রামের মাহফুজুর রহমান কালা (৩৫)।
পুলিশ সুপার বলেন, মনা গত ১৭ জুন রাতে লক্ষীকুণ্ডা ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে এমপি মার্কেটে ইকবালের অফিসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাত ১০টার দিকে ৩ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকদের এ্যাপ্রোন ও হেলমেট পড়ে মোটরসাইকেলযোগে এসে মনাকে ৫/৬ রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যান। এ ঘটনার দুদিন পর ১৯ জুন নিহত ছাত্রলীগ কর্মী মনার মা নাহিদা আক্তার লিপি বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মূলহোতা অনিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অনিকের দেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা, গাজীপুর, কুষ্টিয়া ও পাবনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মানিকসহ তাদের অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানকালে জিগাতলা এলাকায় অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধানসহ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়।
আকবর আলী মুন্সি আরও জানান, আসামিরদের সঙ্গে মনা পরিবারের দীর্ঘদিনের শত্রুতা, চাঁদাবাজী এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বালু মহল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার এই ঘটনার অন্যতম কারণ। আসামিদের মধ্যে অবুঝের বিরুদ্ধে পাঁচটি, কালার বিরুদ্ধে ৪টি, মানিকের বিরুদ্ধে ১১টি, চমনের বিরুদ্ধে ১০টি, অনিকের বিরুদ্ধে ৫টি, রাজিবের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, ঈশ্বরদীর ওসি অরবিন্দ সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
