• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ মে, ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

অটোরিকশার পেটে যাচ্ছে ৩ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ


শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২, ১০:২০ এএম
অটোরিকশার পেটে যাচ্ছে ৩ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ

শেরপুরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নির্দেশনা মেনে চলছে না ব্যাটারিচালিত যানবাহন। এত বিদ্যুৎ নির্ভর হাজার হাজার যানবাহনে প্রতিদিন অপচয় হচ্ছে লক্ষাধিক ইউনিট বিদ্যুৎ। অপচয় রোধে বিকল্প ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে চালকরা বলছেন, সব শর্ত মেনেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, শেরপুর শহরে অনিয়ন্ত্রিত থাকে ওইসব ব্যাটারিচালিত যানবাহন। শহর জুড়েই তিন চাকার যানের দৌরাত্ম।

অটোবাইক মালিক ও শ্রমিকরা জানান, জেলার পাঁচ উপজেলায় ইজি বাইক চলে অন্তত ২০ হাজার। আর ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান চলে আরও ১০ হাজারের মতো। ব্যাটারিচালিত এসব যানবাহন পুরোটাই বিদ্যুৎ নির্ভর। এসব যানের ব্যাটারি ফুল চার্জেই চলে যায় দিনের অর্ধেক সময়। বিদ্যুতের বড় একটি অংশ চলে যায় এসব যানবাহনের পেটে।

শহরের বাগবাড়ী এলাকার বাসিন্দা অটোচালক কমল মিয়া জানান, নিজের বাড়িতে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত তিনি অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ দেন। মাস শেষে তার ৩৬০০-৪০০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে।

আরেক অটোচালক হাসান মিয়া জানান, অটোরিকশায় মোট পাঁচটি ব্যাটারি থাকে। এছাড়া বিশু নামের রিকশাভ্যান চলে চার ব্যাটারিতে। তারা বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে ব্যাটারি চার্জ করছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগের পর্যবেক্ষণ বলছে, প্রতিদিন গড়ে একটি ইজি বাইকের জন্য ১০-১২ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যয় হয়। সেই হিসাবে ইজি বাইক এবং রিকশা ভ্যান মিলিয়ে ৩০ হাজার ব্যাটারিচালিত যানবাহনে প্রতিদিন গড়ে তিন লক্ষাধিক ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিক্রয় এবং বিতরণ বিভাগ শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন, একটি অটো গড়ে ৮-১০ ঘণ্টা চার্জ হলে মাসে ২২০-২৪০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এভাবে ১০ হাজার অটো চার্জ হলে ২৮০০-৩০০০ কিলোওয়াট বা ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ছোট একটি এলাকার জন্য ৩০ হাজার ব্যাটারি চালিত যানবাহন অপ্রয়োজনীয়। আর এগুলোর জন্য যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে তাও কম নয়।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ লাইন্স একাডেমির প্রধান শিক্ষক ও নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জের জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে। ফলে জেলায় যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা দেখা দিচ্ছে সে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমরা পাচ্ছি না এবং বরাদ্দের একটা বড় অংশ অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জেই খরচ হয়ে যাচ্ছে।

আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, শেরপুরে দিন দিন লোড শেডিংয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই অটোরিকশা চার্জে অতিরিক্ত যে বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে এ জন্য বাড়তি বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেওয়া উচিত। অথবা ওইসব যানবাহন চার্জের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা দরকার।

Link copied!