কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ভোলায় সবার দৃষ্টি কেড়েছে প্রায় এক টন ওজনের ষাঁড় ‘লালু’। জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কালীবাড়ি এলাকার খামারি গালিব ইবনে ফেরদৌস এই ষাঁড়টি দুই বছর ধরে পালন করছেন। জেলার সবচেয়ে সুদর্শন ও বড় হিসেবে আলোচিত গরুটি দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারাও। মালিক দাম হাঁকছেন ৬ লাখ টাকা। তবে বাড়ি থেকে কেউ কিনতে চাইলে দরদামে বিক্রি করবেন।
এনটিক ডেইরি লিমিটেডের মালিক খামারি গালিব ইবনে ফেরদৌস জানান, হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়ের ওজন এখন প্রায় ২৮ মন। প্রতিদিন এর ওজন এক কেজি করে বাড়ছে। সারাদিনই ‘লালু’র যত্ন করতে হয়। খাওয়ানো, গোসল করানো ও পরিচর্যাসহ সবকিছু লক্ষ্য রাখতে হয়। শুধু লালুর পরিচর্যার জন্যই খামারে দুই জন শ্রমিক কাজ করেন। ৪০ মাস বয়সী চার দাঁতের এই গরুটিকে এখন প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ কেজি করে খাবার দিতে হচ্ছে। খাবারের তালিকায় রয়েছে নিজস্ব ক্ষেতের কাঁচা ঘাস, শুকনো খড়, গমের ভুষি, খেসারির ভুষি, ভুট্টাভাঙা, সোয়াবিন, সরিষার খৈল, চালেরগুড়া ও পানি। এর উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি ও লম্বায় ১০ ফুট। শুধু সদর উপজেলায় নয়, জেলায় মধ্যে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বড় ও সুন্দর গরুর তালিকায় ‘লালু’ অন্যতম।
খামারি গালিব ইবনে ফেরদৌস আরো জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার এক খামারির কাছ থেকে দুই বছর আগে এক বছর বয়সী ‘লালু’কে কিনেছিলেন তিনি। কেনার পর এটিকে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এর খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বাড়ির পাশে একটি দুই একর ঘাসের জমিও করেছেন তিনি। ভালো দামে এবার গরুটি বিক্রি করতে পারলে আগামীতে এ ধরনের আরো গরু তৈরি করতে তিনি উৎসাহ পাবেন বলেও জানান। তার খামারে এখন বিভিন্ন জাতের ২৩ গাভী রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি গাভী নিয়মিত দুধ দিচ্ছে। এছাড়া ৭ থেকে ১২ মাস বয়সী আরো ১৫টি গাই বাছুর রয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেনারি সার্জন ডা. শাহীন মাহামুদ বলেন, গরুটির মালিক একজন সফল উদ্যোক্তা। “এনটিক ডেইরি লিমিটেড” নামে তিনি একটি খামার গড়ে তুলেছেন। এবার প্রথম বড় জাতের গরু মোটাতাজা করেছেন তিনি। গরুটি লালন-পালনে খামারি গালিব ইবনে ফেরদৌস কোনো ধরনের হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেননি বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার ১ লাখ ৬ হাজার ৯৫৪টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে জেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৬০টি। এর মধ্যে অনেক জায়গায় বড় বড় গরু মোটাতাজাকরণ হচ্ছে। এগুলোর নিয়মিত খোঁজ রাখা হচ্ছে। তবে জেলা শহরের এ গরুটি সবচেয়ে নান্দনিক এবং সুন্দর গরু। জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় গরুটি পালনে বিভিন্ন পরামর্শ ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছে। আশা করছি খামারি এটির ন্যায্য মূল্য পাবেন।

















-20251222091605.jpeg)


















