• ঢাকা
  • সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩০, ১৬ রমজান ১৪৪৬

স্কুল মাঠে বেড়া দিয়ে চাষাবাদ


মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১, ০৬:২১ পিএম
স্কুল মাঠে বেড়া দিয়ে চাষাবাদ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রায়পুর কাচারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ দখল করে ধান ও কলা গাছ রোপণ করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিজেদের জমি দাবি করেছেন। শিক্ষা অফিস বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নে রায়পুর কাচারীকান্দি গ্রামের ইসমাঈস সরদার ও তার স্ত্রী ময়মুন নেছা ২২ শতাংশ এবং মনির সরদার ১১ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেয়। বিদ্যালয়ের জমিদাতা হিসেবে মনির সরদার দীর্ঘ দিন বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি মনির সরদারকে শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে সভাপতি থেকে বাদ দেওয়া হলে তার আপন ছোটভাই আক্তার সরদার বিদ্যালয় মাঠ দখল করে ধান ও কলা গাছ রোপণ করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর মাঠে ধান ও কলাগাছ রোপণের ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সমস্যা হয়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে জমিতে মাটি দিয়ে সীমানা দিচ্ছেন কিছু ব্যক্তি। মাটি কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে আক্তার সরদার বলেন, “আমার জমিতে আমি মাটি কাটতেছি। স্কুলে যদি জমি পায় নিবে। আমার ভাই দলিল দিলে তারটুকু দিতে পারে, আমাদের অন্য ভাই বোনদের জমি দলিল দিতে পারে না। ১৪ শতাংশ জমির ১১ শতাংশ জমি আমার ভাই দলিল দিতে পারে না। কারণ আমারা পাঁচ ভাই-বোন। তারটুকু দিতে পারে আমাদেরটা না।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শোহরাব হোসেন বলেন, “আমি আমার শিক্ষা অফিসারের কাছে গেলে তিনি ইউএনও স্যারের কাছে নিয়ে গিয়ে দরখাস্ত দিতে বলে। আমি সেখানেও দরখাস্ত দেই। তখন ইউএনর স্যার তহশিলদারকে দিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে দলিলপত্রসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে স্যারের কাছে যেতে বলে।”

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন বলেন, “সাবেক সভাপতি মনির সরদার জমিদাতা হয়েও বিদ্যালয়ের জমি তার ভাই দিয়ে দখল করে আছে। কিছু বললেই লোক পাঠায় মারতে। আবার মামলা করার হুমকি দেয়। আমি এর সঠিক বিচার ও সমাধান চাই। যাতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বর্জায় থাকে।”

অভিযোগের বিষয় বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনির সরদার বলেন, “আমি ১১ শতাংশ জমির দলিল দিয়েছি, সেই দলিল ঠিকে নাই। এখন আইনে যা হওয়ার তাই হবে। আমার ভাইদের জায়গায় তারা কি করলো, সেটা তাদের বিষয়, আমার নয়। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।”

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন, “বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছে। আমি তাৎক্ষণিক ওই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখে আপাতত মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন দিন-তারিখ ঠিক করে জায়গাটা পরিমাপ করলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।”

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “রায়পুর কাচারীকান্দি সরকারি  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসেছিলেন। আমি তহশিলদারকে পাঠিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করেছি এবং বিদ্যালয়ের দলিলপত্র আনতে বলেছি। যারা দাবী করে তাদেরও দলিলপত্র আনতে বলেছি। কার কি সত্ত্ব আছে, তা দেখে সিদ্ধান্ত নিবো। আপাতত বেড়া ছাড়া যে স্থান আছে, ওখান দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে বলা হয়েছে।”

Link copied!