• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

শাশুড়ি হত্যা, শিশুসহ গৃহবধূ কারাগারে


বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২২, ১০:০৬ এএম
শাশুড়ি হত্যা, শিশুসহ গৃহবধূ কারাগারে

বরিশালের বাকেরগঞ্জে শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা মামলায় দেড় বছরের শিশুসন্তানসহ লাবণ্য আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শাশুড়ি নাজনীন বেগমকে হত্যার কথা স্বীকার করেন লাবণ্য। পরে আদালত তাকে দেড় বছর বয়সী শিশুসন্তানসহ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) সত্য রঞ্জন খাসকেল গৃহবধূর বরাত দিয়ে বলেন, তিন বছর আগে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গাল গ্রামের মো. খলিল হাওলাদারের মেয়ে লাবণ্য আক্তার ও বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী গ্রামের উজ্জ্বলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবন কলহ লেগেই থাকত। একপর্যায়ে জীবিকার তাগিদে উজ্জ্বল একটি চাকরি নিয়ে ঢাকায় চলে যান। ছয় মাস বা এক বছর পরে তিনি বাড়িতে আসতেন। আর গৃহবধূ লাবণ্য গ্রামে শাশুড়ির সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করতেন। কিছুদিন পর লাবণ্য তার স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় থাকার কথা জানান তার স্বামীকে। কিন্তু উজ্জ্বল তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি দেড় বছরের শিশুর দুধ এবং খরচের টাকাও দিতেন না তিনি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত। পাশাপাশি শাশুড়ির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় সময় ঝগড়া হতো লাবণ্যের।

ওসি আরও জানান, ঈদ উপলক্ষে ৩ মে গ্রামের বাড়িতে আসেন উজ্জ্বল। এরপর গত ৮ মে তাদের মধ্যে একই বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এজন্য ওই দিনই শিশুসন্তানকে নিয়ে অভিমান করে বাবার বাড়িতে চলে যান গৃহবধূ। ১০ মে ঢাকায় চলে যান স্বামী উজ্জ্বল। এরপর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রাখেন তিনি।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে গৃহবধূ আরও উল্লেখ করেছেন, ঘটনার রাতে শিশুসন্তানকে বাড়িতে রেখে লুকিয়ে স্বামীর বাড়িতে যান। সেখানে আলমারির মধ্যে গৃহবধূ লাবণ্যের দুই হাজার টাকা রাখা ছিল। কিন্তু আলমারির চাবি ছিল শাশুড়ির কাছে। তার কাছে চাবি চাওয়া হলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়া থেকেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

গৃহবধূর জবানবন্দি অনুযায়ী—শাশুড়িই তাকে (লাবণ্য) হত্যার জন্য ছুরি বের করেন। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। তখন শাশুড়ির হাত থেকে ছুরি কেড়ে নেন গৃহবধূ। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা করেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন লাবণ্য। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত নয় বলেও আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা সত্য রঞ্জন খাসকেল বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে উজ্জ্বল একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গৃহবধূ লাবণ্যকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ সময় লাবণ্য আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে গৃহবধূকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর সঙ্গে তার এক বছর ৬ মাস বয়সী শিশুসন্তান মুজাহিদুল ইসলামকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

Link copied!