• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩০, ২০ রমজান ১৪৪৬

নিখোঁজ ৩ ছাত্রীকে যেভাবে উদ্ধার করল পুলিশ


জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১, ০৭:৪১ পিএম
নিখোঁজ ৩ ছাত্রীকে যেভাবে উদ্ধার করল পুলিশ

জামালপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে তিন দিন আগে নিখোঁজ হওয়া তিন ছাত্রীকে রাজধানী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে পুলিশের একটি দল মুগদা এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করে।

নিখোঁজ তিন মাদ্রাসার ছাত্রীরা হলো- ইসলামপুর উপজেলার দারুত ত্বাকওয়া মহিলা মাদ্রাসার মনিরা আক্তার (১০), মিম আক্তার (৯) ও সূর্য ভানু (১১)।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় জামালপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জামালপুর পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ, সহকারী পুলিশ সুপার (ইসলামপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়া, জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম খান।

পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার মুহতামিম আসাদুজ্জামানের স্ত্রীর ১ হাজার টাকা হারিয়ে গেলে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকা বাকি ছাত্রীদের সন্দেহ করে। সেই সঙ্গে টাকা ফেরত দিতে বলে। এ সময় তাদের তিনজনকে সবাই সন্দেহের চোখে দেখলে তারা নিজেদেরকে অসহায় মনে করে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। পরে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশি তৎপরতায় সিসি ফুটেজের মাধ্যমে ঢাকার মুগদা এলাকা থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের উদ্ধার করা হয়।”

এর আগে জামালপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই তিন ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে জামালপুরের ইসলামপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নামে। পরে তারা একটি রিকশা ভাড়া করে। কিন্তু কোথায় যাবে তারা বলতে পারছিল না। পরে ওই রিকশাচালক তাদের মুগদায় নিজ বাসায় নিয়ে রাখেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে জামালপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (ইসলামপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই রিকশাচালকের বাড়ি থেকে তিন ছাত্রীকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে রিকশাচালক মো. রাজা মিয়া বলেন, “গত সোমবার দুপুরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ওই তিন ছাত্রী তার রিকশাটি ভাড়া করে। কিন্তু কোথায় যাবে, তারা বলতে পারছিল না। পরে তারা জানায়, তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। ফলে ছাত্রীদের তার বাসায় তিনি নিয়ে যান। গত তিন ধরে তারা তার বাড়িতে ছিল।”

গত ১২ সেপ্টেম্বর ফজরের নামাজের সময় ইসলামপুর গোয়ালেরচর ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকার দারুত তাক্বওয়া মহিলা ক্বওমী মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয় ওই তিন ছাত্রী। 

নিখোঁজের ঘটনায় পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ইসলামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মাদ্রাসার মুহতামিম মোঃ আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী। এরপর দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে মাদ্রাসাটির মুহতামিমসহ চার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। 

এদিকে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে নিখোঁজ ছাত্রী মনিরার বাবা মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে থানায় মানবপাচার বিরোধ আইনে একটি মামলা করেন। পরে চার শিক্ষককে মানবপাচার আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। 

আগামী সোমবার এই রিমান্ড শুনানির দিন ঠিক করেন আদালত।


 

Link copied!