পানিতে তলিয়ে গেছে রংপুর নগরী। এক রাতের টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট, অলিগলি, বাড়িতে ঢুকে পড়েছে পানি।
গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) রংপুরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৬৫ মিলিমিটার।
সোমবার (৪ অক্টোবর) সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্রামের মতো শহরের নিচু এলাকাগুলো এখন পানিতে থইথই। কোথাও কোথাও হাঁটু পানিতে ঢেউ খেলছে। আবার কোথাও কোমর সমান পানি। শহরের জলকর, জুম্মাপাড়া, জুম্মাপাড়া, আদর্শপাড়া, কামারপাড়া, বাবুখাঁ, কামাল কাছনা, মাহিগঞ্জ, বোতলা, মুলাটোল, মুন্সিপাড়া, গোমস্তপাড়া, খলিফাপাড়া, নগর মীরগঞ্জ, হোসেন বাজার, সর্দারপাড়া, মাস্টারপাড়া, ঈদগাহপাড়াসহ প্রায় ৫০টির মতো পাড়া-মহল্লায় বৃষ্টির পানি আটকে আছে।
রাস্তাঘাট-দোকানপাট ও ঘরে পানি ওঠায় মানুষের দুর্ভোগের দিন শুরু হয়েছে। অনেক রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। নগরবাসীর অভিযোগ শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া ১৬ কিলোমিটারের শ্যামা সুন্দরী ক্যানেল ঠিকমতো ড্রেজিং না করাসহ অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে একটু ভারি বৃষ্টি হলেই পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “গত দুদিন ধরে রংপুরে অব্যাহত বৃষ্টিপাতে তিস্তা, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী নদী তীরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি পানিতে তলিয়েছে। কোথাও কোথাও পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। আর রংপুর নগরীর অলিগলিসহ বিভিন্ন সড়কে ও পাড়া-মহল্লায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।”
নগরীর জলকরের রবিউল ইসলাম, সর্দারপাড়া গ্রামের শফিয়ার রহমান, জুম্মাপাড়ার রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই জানালেন, রোববার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে তার বাড়ি সংলগ্ন শ্যামা সুন্দরী এখন পানিতে টইটুম্বর। বৃষ্টির পানি তাদের ঘরে ঢুকে পরেছে। ঘরের জিনিসপত্রসহ পরিবারের সবাইকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নগরীর বাবুঁখা এলাকার আঙুর আলী জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য এখনও পর্যাপ্ত ড্রেন তৈরি হয়নি। পাড়া-মহল্লার ছোট ছোট খালগুলো ভরাট আর দখলদারিত্বের কবলে পড়ায় বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়ির আশপাশসহ নগরীর অধিকাংশ নিচু এলাকাতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নগরীর নিচু সড়কগুলো উঁচু করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির বিষয়টি প্রকৃতি নির্ভর। গত বছরের বৃষ্টির ভয়াবহতার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি এবার। ক্যানেল পরিষ্কার থাকায় পানি নেমে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরদের পানিবন্দি মানুষজনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছ।”