• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

উপকূলে জমে উঠেছে ইলিশের মেলা


নুরউদ্দীন খান সাগর, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২১, ০৬:৪৯ পিএম
উপকূলে জমে উঠেছে ইলিশের মেলা

বেশ কিছুদিন বাজারে দেখা যায়নি তেমন একটা ইলিশের আনা-গোনা কিন্তু হঠাৎ করেই বাজারগুলোতে জমে উঠেছে ইলিশের বাজার।

ইলিশের ভরা মৌসুম হওয়ায় এমন অবস্থা বলে মনে করছেন সবাই। সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার শুরু থেকে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলে জমে উঠেছে ইলিশের মেলা। উপকূলজুড়ে জেলেদের মুখে তৃপ্তির ঢেকুর আর সোনালী হাসি। ইলিশের গন্ধ মুহু মুহু ধ্বনিতে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। জেলেদের ঘর থেকে উঁচু মহল পর্যন্ত এখন ইলিশের স্বাদে আচ্ছন্ন। তবে দাম চড়া হওয়ার কারণে ক্রেতারা সেই স্বাদ পাচ্ছেন না।

বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে উপজেলার গহিরা উপকূলীয় এলাকার উঠান মাঝির ঘাট, দোভাষী ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই দিনে সাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে অর্ধশতাধিক ফিশিং ট্রলার। ফিরে আসা ইলিশ ভর্তি এসব ট্রলারগহিরা উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে সারিবদ্ধভাবে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণে মাঝিমাল্লাদের মধ্যে ছিল সংরক্ষণে তোরজোড়।

মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখে।

কূল এলাকায় দেখা যায়, কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে। ট্রলার থেকে মাছ নামতেই জেলেরা ডাক হাকছেন মাছের দামের।

এদিকে উপজেলার মাছের সবচেয়ে বড় আড়ত কালাবিবির দিঘির মোড়ে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

৬০০ গ্রাম সাইজের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৫০০ টাকায়। প্রতি তিন পিসে এক কেজি এমন ইলিশ সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, ছোট জাটকা প্রতিকেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

দৌভাষী ঘাট মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা বলেন, এক সপ্তাহ আগে যে ইলিশ ২ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সেগুলোর হালি ২৫০০ হাজারের হাকাচ্ছে। তার মতে, বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে ইলিশের দাম কমে আসবে।

উঠান মাঝি ঘাটের বাজারের ইলিশ বিক্রেতা আরমান জানান, ইলিশের মৌসুম হলেও অন্য বছরের তুলনায় এ সময় ইলিশ ধরাপড়ছে কম। এ কারণে বাজারে ইলিশের দাম উঠা নামা করলেও অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।

উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রী কৃষ্ণ দাশ বলেন, মূলত সাগরে মিষ্টি পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে গভীর সমুদ্র থেকে বড় মাছগুলো কাছে চলে আসে আর তখনি জেলেরে জালে আটকা পড়ে যায়, আর এবছর বৃষ্টি হওয়ার পরও জেলেদের জালে প্রথম দিকে মাছের দেখা মেলেনি। আজ থেকে জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে উপকূলে জমে উঠতে শুরু করেছে ইলিশের আমেজ। আশা করি আগামী পূর্ণিমাতে জেলেদের জালে আরও ভালো মাছ পরবে।

উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন, “আসলে আমরা সরেজমিনে বিষয়টি গিয়ে দেখেছি, জেলেদের জালে তেমন আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি প্রথম দিকে। ভাদ্র মাসের শুরু থেকে মাছ ধরা পড়েছে। আর যেসব মাছ পড়ছে তা সাইজে অনেক ছোট।” 
 

Link copied!