• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৩, ১০:২৫ পিএম
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু
কোহলি–রাহুল জুটিতে ভারত জয়ের বন্দরে। ছবি : সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ ক্যামব্যাক করে ম্যাচ জিতে নিল ভারত। অজিদের দেওয়া ২০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের দারুণ ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৫২ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেই রোহিত শর্মার দল।

এর আগে ভারতীয় বোলারদের বোলিং তোপের মুখে ৪৯ ওভার ২ বলে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। কথায় আছে ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। সেটাই সত্য হল অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে। ম্যাচের ৭ ওভার ৩ বলের জশ হ্যাজেলউডের বলে ক্যাচ আউট হতে পারতেন বিরাট কোহলি। কিন্তু মিচেল মার্শ ছেড়েদেন সেই ক্যাচটি। আর ম্যাচটা হেরেও যেতে হয়েছে সেই বিরাটের কাছেই। অবশ্য তার সঙ্গে সমান তালে লড়ে যাওয়া লোকেশ রাহুল দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।

এদিন ২০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অজিদের বিপক্ষে ভারতের শুরুটা হয়েছে খুবই বাজে। পরিস্থিতি এমন ছিল রানের খাতা খোলার আগেই ড্রেসিংরুমে তিন ব্যাটার ফিরে গেছেন। অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং শ্রেয়াশ আইয়ার ফিরেছেন জশ হ্যাজেলউডের বলে। আরেক ওপেনার ঈশান কিষাণ আউট হয়েছেন মিচেল স্টার্কের বলে। স্কোর বোর্ডে ২ রানে নেই তিন উইকেট। ভারতীয়দের ব্যাটিং ধংসস্তুপ থেকে টেনে তুলেন কোহলি-রাহুল। এই দুইজনের দৃষ্টি নন্দন ব্যাটিংয়ে ভারতকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়।

যখন যে বল যেভাবে খেলার দরকার ছিল ঠিক সেভাবেই খেলেছে এই দুই ব্যাটার। সময়উপযোগী ব্যাটিং করে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন তারা। দুজনই তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। গড়েন ২১৫ বলে ১৬৫ রানের জুটি। তাদের এই পার্টনারশিপ ভাঙে হ্যাজেলউডের বলে ৮৫ রান করে কোহলি বিদায় নিলে। ভারতের রান মেশিন আউট হলে শেষ কাজটুকু সাড়েন হার্দিক পান্ডিয়া ও রাহুল। হার্দিক ৮ বলে ১১* রান ও রাহুল ১১৫ বলে সেঞ্চুরির ৩ রান দূরে থেকে ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়েন। অজিদের হয়ে হ্যাজেলউড ৩৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন।

এরআগে, চেন্নাইয়ে টস জিতে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেনিংয়ের শুরুটা করতে ক্রিজে আসেন মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ভারতের হয়ে বোলিংয়ে শুরুটা করেন পেসার জাসপ্রীত বুমরাহ। সেই ওভারে মাত্র ১ রান যোগ করেন অজি দুই ওপেনার। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসা মোহাম্মদ সিরাজকে চার মেরে স্বাগত জানায় ওয়ার্নার। অবশ্য

এরপর বাকি পাচঁ বলে কোন রান নিতে পারেননি অজি ব্যাটাররা। তৃতীয় ওভারে এসেই বুমরার ব্রেক-থ্রু। তুলে নেন মিচেল মার্শের উইকেট। ওভারের দ্বিতীয় বলেই স্লিমে বিরাট কোহলির দারুণ ক্যাচে পরিণত হবার আগে মার্শ ৬ বল খেলে করতে পারেননি কোন রান। এই ক্যাচ নেওয়ার ফলে ভারতীয়দের হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নিয়েছেন কোহলি। তিনি ক্যাচ নিয়েছেন ১৫টি।

এরপর ওর্য়ানারের সঙ্গে জুটি গড়েন স্টিভ স্মিথ। তাদের পার্টনারশীপ ছাড়িয়েছে হাফসেঞ্চুরি। এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বিশ্বকাপে ১,০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন ওয়ার্নার। ব্যক্তিগত ১৬ রানে পৌঁছেই রেকর্ড গড়ে ফেলেন ওয়ার্নার। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ১ হাজারি ক্লাবে প্রবেশের কীর্তি এখন তার দখলে। তার লেগেছে ১৯ ইনিংস। অন্যদিকে আগের দুই রেকর্ডধারী ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন ও সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্সের লেগেছিল ২০ ইনিংস করে। ভারতের বিপক্ষে ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করা ওয়ার্নার অবশ্য শেষ পর্যন্ত ফিফটির দেখা পাননি। ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৪১ রানে। ৫২ বল স্থায়ী ইনিংসটি ৬টি চারে সাজানো। স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৬৯ রান।

তবে ওয়ার্নারের বিদায়েও অস্ট্রেলিয়ার খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। কারণ স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেন মিলে ফের দারুণ জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দিয়েছেন। তবে দলীয় ১১০ রানে এই জুটি ভাঙে স্টিভ স্মিথের বিদায়ে। হাফসেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে থাকা স্মিথকে ফেরান জাদেজা। তার ৪৬ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৫টি চারে। তার বিদায়ের পর ভারতের বোলারদের সামনে ভেঙে পড়ে অজিদের মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডার। সেভাবে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি কেউই। মিডল অর্ডারে ২৭ রান আসে মার্নাস লাবুশানের ব্যাট থেকে আর শেষ দিকে মিচেল স্টার্কের ২৮ রানের সুবাদে ১৯৯ রান করে অজিরা।

অজিদের উইকেট গুলো ভাগাভাগি করে নেন জাদেজা-অশ্বিন-বুমরাহ-কুলদীপ ও সিরাজ। ১০ ওভারে ২৮ রান খরচে ৩ উইকেট নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। এছাড়া ২টি করে উইকেট গেছে কুলদীব যাদব ও বুমরাহর ঝুলিতে। ১টি উইকেট পেয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মোহাম্মদ সিরাজ।

Link copied!