বাংলাদেশ দল যখনই বিপদে তখনই দেখা যায় উদ্ধারকর্তা হিসেবে কেউ একজন সামনে চলে আসেন, প্রতিপক্ষের বোলারদের নির্বিষ করে তুলেন তিনিই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এ বিপদের সারথি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
৩৫ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহর অবসরের সিদ্ধান্তে থেমে গেল তার ১২ বছরের পথচলা। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিংস্টোনে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তার। প্রায় ১৮ মাস পর তিনি দলে ফিরেই হারারেতে করেছেন অপরাজিত ১৫০। দলকে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রেখেছিল তার সেই ইনিংস।
হারারেতে টেস্টের পঞ্চম দিন মাঠে নামার আগে গার্ড অফ অনার দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহর সতীর্থরা। ধারাভাষ্যকাররাও আলোচনা করছিলেন মাহমুদউল্লাহর অবসর নিয়ে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্টের তৃতীয় দিনই মাহমুদউল্লাহর অবসর নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সে সময় বিসিবি বা মাহমুদউল্লাহ কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছিলেন, “আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কিছু বলেননি। তবে একজন ফোন করে জানিয়েছে, এই টেস্টের পর আর সে (মাহমুদউল্লাহ) টেস্ট খেলতে চায় না। ড্রেসিংরুমে নাকি সবাইকে সে এটা বলেছে। কিন্তু আমার কাছে এটা খুবই অস্বাভাবিক লেগেছে। খেলা তো এখনো শেষ হয়নি!”
টেস্টে খেলার ব্যাপারে মাহমুদউল্লাহ বোর্ডকে লিখিত দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি, “আমরা তো এবার ওদের সবার কাছ থেকেই লিখিত নিয়েছি ভবিষ্যতে তারা কে কোন সংস্করণে খেলতে চায়। জিম্বাবুয়ে যাওয়ার চার-পাঁচ দিন আগে এটা নেওয়া হয়েছে। রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) লিখেছে সে তিন ফরম্যাটেই খেলতে চায়। টেস্টের ক্ষেত্রে লিখেছে, সুযোগ পেলে আমি খেলতে চাই। সে জন্যই তাকে টেস্টে নেওয়া হলো।”
অবসরের কথা শুনে দলের সবাই খুব অবাক হয়ে যায়। আসলে কেউই জানত না তিনি এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। হারারে টেস্টে দেশের হয়ে সেঞ্চুরির পর ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, আমিও টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারি, এটাই নাকি দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এখন আর তিনি টেস্ট খেলতে চান না।
এটি ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের ৫০ তম টেস্টও। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৩.৪৯ গড়ে ২ হাজার ৯১৪ রানের পাশাপাশি ৪৩ উইকেট ও পাঁচটি সেঞ্চুরি রয়েছে মাহমুদউল্লাহর।