মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০ গুণ বড় একটি ধূমকেতু। যা প্রতি ঘণ্টায় ২২ হাজার মাইল বেগে পৃথিবীর দিকে ছুটছে। বিষয়টি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে।
নাসার হাবল টেলিস্কোপ নির্ধারণ করেছে, ধূমকেতুর বরফের নিউক্লিয়াসটির ওজন প্রায় ৫০০ ট্রিলিয়ন টন। এটি ৮৫ মাইল প্রশস্ত। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড রাজ্যের চেয়েও বড়।
এ বিষয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউসিএলএ) গ্রহ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিদ্যার অধ্যাপক ডেভিড জেউইট বিবিসিকে বলেন, “আমরা সবসময় সন্দেহ করেছি এই ধূমকেতুটি সবেচেয়ে বড় হবে। কারণ অনেক দূরত্বে থাকার পরও বেশ উজ্জ্বল দেখা গেছে। এখন আমরা নিশ্চিত।”
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এক বিবৃতি জানিয়েছে, ধূমকেতুটি যৌথভাবে আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী পেড্রো বার্নার্ডিনেলি ও গ্যারি বার্নস্টেইন। তারা চিলির সেরো টোলোলো ইন্টার-আমেরিকান অবজারভেটরির ডার্ক এনার্জি সার্ভে থেকে ধূমকেতুটির আর্কাইভাল চিত্র আবিষ্কার করেন।
ধূমকেতুটিকে বরফের ‘লেগো ব্লক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে নাসা। একটি মহাকর্ষীয় পিনবল গেমে তাদের সৌরজগতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল। কেড-আউট করা ধূমকেতুগুলো সৌরজগতকে ঘিরে থাকা দূর-দূরান্তের ধূমকেতুর বিস্তীর্ণ জলাশয় ওর্ট ক্লাউডে বাস করে।
ম্যাকাও ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ম্যান-টু হুই ধূমকেতুটিকে ‘একটি আশ্চর্যজনক বস্তু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, “ধূমকেতুটি বেশ বড় হতে পারে এটা আমরা অনুমান করেছি। তবে এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের সর্বোত্তম তথ্য দরকার ছিল।”
ত্রিশ মিলিয়ন বছর দীর্ঘ উপবৃত্তাকার কক্ষপথ অনুসরণ করছে এই ধূমকেতু। এটি সূর্য থেকে প্রায় অর্ধ আলোকবর্ষের মতো দূরে নিয়ে গেছে। ধূমকেতুটি এখন সূর্য থেকে দুই বিলিয়ন মাইলেরও কম দূরে। যা সৌরজগতের সমতলে প্রায় লম্ব হয়ে আছে।
তবে চিন্তার কিছু নেই। সবচেয়ে বড় এই ধূমকেতুটি এখনও সূর্য থেকে এক বিলিয়ন মাইল দূরে। যা ২০৩১ সালের আগে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে নাসার বিজ্ঞানীরা।
৫০০ ট্রিলিয়ন টন ওজনের ধূমকেতুটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০১০ সালে। কিন্তু এতদিন এটির আকার ও ওজন নির্ধারন করা যায়নি। প্রায় ১ যুগ পর যা নিশ্চিত হয়েছে নাসার হাবল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দেখা অতীতের যেকোনো ধূমকেতুর চেয়ে এটির আকার সবচেয়ে বড়।






































