“স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে বেতার দ্বিতীয় ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করেছে, এটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।” রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতারের আলোচনা সভায়, প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ একথা বলেন।
এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও দপ্তর প্রধান মিস বিট্রিস কালদুন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সালাউদ্দিন আহমেদ।
মানুষের মানবিকতা ও নৈতিকতা রক্ষায় বাংলাদেশ বেতারের ভূমিকা অব্যাহত রাখতে নতুন নতুন অনুষ্ঠান নির্মাণের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, “আমাদের মনন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সমাজ বিনির্মাণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে বেতার। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এখনও নিয়মিত বেতার শোনেন। তবে আকাশ সাংস্কৃতির প্রভাবে বেতার অনেকটা পিছিয়েছে। এখন বেতার অ্যাপসের মাধ্যমে দেশ থেকে দেশের বাইরে চলে গেছে আমাদের বেতার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যদি বেতারের আরও প্রচার প্রসার করা যায়, তাহলে বেতার আরও মানুষের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবে।”
বাংলাদেশ বেতারের সকলের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “মানুষের মানবিকতার যাতে উন্মোচন ঘটে তার জন্য আপনারা কাজ করুন। মানুষ দিনদিন বস্তুবাচক ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে, কাজেই এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করুন আপনারা।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি মো. মকবুল হোসেন বলেন, “দক্ষতার সঙ্গে ও প্রাঞ্জলভাবে বাংলাদেশ বেতার তাদের সকল আয়োজন করে থাকেন। বাংলাদেশ বেতার সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করেছিল ১৯৭১ সালে। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সকল শিল্পীবৃন্দ শুধুমাত্র কণ্ঠের ব্যবহারে আমাদের মুক্তিপ্রেমী যোদ্ধাদের সংগ্রামী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। বেতার তার জন্মলগ্ন থেকেই মানুষের প্রতি একটা আস্থা অর্জন করেছে। বেতারের সেই আস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দারুণভাবে প্রয়োগ করতে হবে বলে আমি মনে করি।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি আহমদ কামরুজ্জামান বলেন, “রেডিওতে অনুষ্ঠান আরও জীবনঘনিষ্ঠ করার তাগিদে আমরা কাজ করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যেমন হতে পারে বাংলাদেশ বেতারের একটি ফেসবুক পেইজ, যার মাধ্যমে বেতার সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে যেতে পারবে।"
আলোচনা পর্বের শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে দেশ বরেণ্য শিল্পীবৃন্দ অংশ নেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতারের সকল কেন্দ্রে তিনদিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।