দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লাগাম টেনে ধরতে সরকার সারা দেশ ১১টি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। নতুন এই বিধিনিষেধে থাকছে রাস্তায় বের হলে সবাইকে পরতে হবে বাধ্যতামূলক মাস্ক। এ নিয়ে নজরদারির জন্য বসানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সরজমিনে রাজধানীর চিত্র পুরোটা ভিন্ন। রাজধানীর অধিকাংশ মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারে কোনো সচেতনতা দেখা যায়নি। বিশেষ করে পাড়ামহল্লার নিম্ন আয়ের মানুষ মাস্ক ব্যবহারে অনীহা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ মাস্ক ব্যবহার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যবিধি সচেতনতায় অনেকটা উদাসীন।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে রাজধানীজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলার কথা থাকলে তা-ও কোথাও চোখে পড়েনি। শুধু শাহবাগে অল্প সময়ের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জীব দাসের নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় সংবাদ প্রকাশের প্রতিনিধির। আবুল কাশেম বের হয়েছেন বাজার করতে। তিনি বলেন, “বাসা থেকে মাস্ক পরেই বের হয়েছি। পথে আসার সময় পড়ে গেছে। এখন একটা কিনে নেব।”
রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা নিউমার্কেট ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ নিম্ন আয়ের মানুষের মুখে মাস্ক নেই। তারা কেউই স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সচেতন নয়। সবাই মাস্ক ছাড়া চলাচল করছে। কেউ জটলা বেঁধে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ আবার মাস্ক ছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে ধূমপান করছেন।
মুরগি বিক্রেতা রহমত মিয়া সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “অনেকের সঙ্গে কথা বলতে হয়। মাস্ক পরা থাকলে কথা বলতে পারি না। তাই খুলে রাখছি।”
মাস্ক না পরলে করোনার ঝুঁকি আছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “যার করোনা হওয়ার এমনি হবে। কই করোনা তো আইছে অনেক দিন, আমার তো একবারও হয়নি।”
নিউমার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, অনেক দোকানি মাস্ক পরছেন, কিন্তু সেটা থুতনি পর্যন্ত। অনেক দোকানি মাস্ক পরেননি। মাস্ক পরার বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।”
করোনার এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি না মানা নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “দেশের বর্তমান করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে গণপরিবহন এবং বাজার থেকে থেকে। সরকার নিম্ন আয়ের মানুষ ও দেশের সার্বিক অর্থনীতির কথা চিন্তা করে লকডাউন না দিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।”
ডা. লেলিন চৌধুরী আরও বলেন, “এখন আমাদের মতো সাধারণ মানুষের উচিত স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলা। সে ক্ষেত্রে প্রথম কাজ হলো অবশ্যই সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। করোনা প্রতিহত নয়, প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধিকে অবহেলা করলে আবার সংক্রমণ বাড়বে। আর এই সংক্রমণ কমানো কঠিন হবে।”