ঢাকার শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ ঢাকায় লুকিয়ে রেখেছেন। মাসুম নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি হাতিরঝিলে নষ্ট করেছেন। বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মাসুম নিজের পরিচয় ও ঢাকায় গুলি করে আওয়ামী লীগ নেতা ও কলেজছাত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন খোরশেদ আলম।
এসআই বলেন, “মাসুম নিজের বিরুদ্ধে থাকা হত্যাসহ অন্য মামলার কথাও স্বীকার করেছেন।”
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “কলেজছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি মাসুম টিভিতে দেখে জানতে পারেন।”
বগুড়া থেকে জয়পুরহাট হয়ে প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যাওয়া মাসুমের উদ্দেশ্য ছিল বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
রাজধানীতে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ওরফে ‘কিলার’ মাসুমকে সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গ্রেপ্তার মাসুমকে আদালতে উপস্থিত করা হলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
২৭ মার্চ সকাল সোয়া ৭টার দিকে বগুড়া শহরের চারমাথা বাস টার্মিনালের পাশে খাজা আবাসিক হোটেলর দ্বিতীয় তালার ১০১ নম্বর কক্ষ থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে টার্গেট ব্যক্তির (টিপু) নাম পান তিনি। মাসুম টিপুকে সরাসরি গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর মাসুম দেশ ত্যাগ করতে সীমান্ত এলাকায় চলে গিয়েছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রোববার সকাল সোয়া ৭টার দিকে বগুড়া জেলা শহরের চারমাথা বাস টার্মিনালের পাশে খাজা আবাসিক হোটেলের দ্বিতীয় তালার ১০১ নম্বর কক্ষ থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুম ওই হোটেলে ‘মামুন’ পরিচয়ে রুম ভাড়া নিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে মাসুমের গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম টিপু। মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিনি। এ সময় সামিয়া আফরিন প্রীতি (২৪) নামের একজন রিকশা আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহত প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন টিপুর গাড়িচালক মুন্না। তিনি বর্তমানে ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
পরের দিন সকালে শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১, ১২, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি। এ মামলায় তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি।
শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মোল্ল্যা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।