জাপানি মা এরিকো নাকানোর কাছে তার দুই শিশুকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। তবে মায়ের কাছে থাকলেও প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে যেকোনো সময় বাবা ইমরান শরীফ শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালত বলেছে, শিশু দুটি ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকবে মায়ের কাছে। আর বাবা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্বাধীনভাবে সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। সন্তানদের স্কুলে যাওয়া এবং পড়াশোনা চলবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া সন্তানদের নিয়ে দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর দুই শিশুকন্যা জেসমিন মালিকা (১১) ও লাইলা লিনাকে (১০) নিজের কাছে নেওয়ার জন্য জাপানি মা নাকানো এরিকোর করা আপিলের বিষয়ে শুনানির বিষয়ে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, ওই দুই মেয়ে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের মায়ের কাছে থাকবে। মায়ের কাছে থাকলেও প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে যেকোনো সময় বাবা ইমরান শরীফ শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। গত ১৫ ডিসেম্বর সদ্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ১২ ডিসেম্বর মেয়েদের দুইদিন গুলশানে তার মায়ের বাসায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। আদেশ অনুযায়ী, সেই দিন রাত ১০টা থেকে মায়ের সঙ্গে থাকার কথা ছিল তাদের। কিন্তু বাবার পক্ষ থেকে সেই আদেশ পালন করা হয়নি।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ পালন না করায় পরদিন ১৩ ডিসেম্বর সকালে মায়ের পক্ষ থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে আপিল বিভাগে বিষয়টি অবগত করা হয়। সেদিন তাৎক্ষণিক দুই মেয়েসহ বাবাকে আদালতে তলব করেন আপিল বিভাগ। এরপর ওই দিন বেলা ১১টার পর দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আপিল বিভাগে হাজির হন বাবা। পরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বিচারপতিরা খাসকামরায় ডেকে নেন দুই শিশুকন্যাকে। তাদের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টা কথা বলার পর তাদের বাবা-মাকেও খাস কামরায় ডেকে নেওয়া হয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের উভয় পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকরা বসে কথা বলেন।
এরপর আপিল বিভাগ সোমবার রাতেই মায়ের কাছে শিশুদের বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া বাবা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে আদালত অবমাননা করেছেন বলে মন্তব্য করেন আপিল বিভাগ।