• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বাহারি ইফতারে জমজমাট চকবাজার


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩, ০৭:০৩ পিএম
বাহারি ইফতারে জমজমাট চকবাজার

রমজান মাসের প্রথম দিনেই জমে উঠেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজার। বেলা যত গড়িয়েছে ততই জমজমাট হয়ে ওঠে ইফতার বাজার।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজ শেষে পুরান ঢাকার চকবাজার জামে মসজিদের সামনের সড়কের বসে বাহারি ইফতার। দুপুরের পর চকবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রচলিত ইফতারির পাশাপাশি নানান স্বাদের বাহারি আয়োজন সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বাহারি এসব ইফতারির স্বাদ নিতে দুপুরেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন ভোজনবিলাসীরা। ঐতিহ্যবাহী খানদানি ইফতারি কিনতে দেখা গেছে দীর্ঘ জটলা।

প্রতি বছরের মতো এবারও চকবাজারের ইফতারির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’ নামের বিশেষ ইফতারি। এটি কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’ তৈরিতে মাংস, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, ডাবলি, বুটের ডাল, ডিম, মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচসহ নানা পদের খাবার আইটেম এবং হরেক ধরনের মসলা প্রয়োজন হয়। প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে এটি বিক্রি হচ্ছে। ৬৮ বছর আগে ১৯৪৫ সালে শাহী জামে মসজিদ চত্বরে বাণিজ্যিকভাবে এ খাবার বিক্রি শুরু করেন এক ব্যক্তি। সেই খাবারটি এখন পুরান ঢাকাসহ গোটা রাজধানীতে একটি আকর্ষণীয় ইফতারির আইটেম হিসেবে পরিচিত।

রাজধানীর বংশাল থেকে এসেছেন শাফিউল ইসলাম। পরিবারের জন্য প্রথম রোজার ইফতারে বাহারি আইটেমের সংযোজন করতেই তিনি এসেছেন চকবাজারে। তিনি বলেন, “প্রতি বছর প্রথম রোজায় এখানে আসি বড় বাপের পোলায় খায়সহ অন্যান্য ইফতারি কিনতে। গত বছরগুলোতে করোনার কারণে আসতে পারিনি। আমি ২০০৬ সাল থেকে এখানে আসি। তবে শুধু প্রথম রোজায় আসা হয়। আজ বড় বাপের পোলায় খায়, পেস্তা শরবত, দইবড়া, জিলাপিসহ বেশ কিছু আইটেম কিনেছি। চকবাজারের এই ইফতারির স্বাদ আর কোথাও পাওয়া যাবে না। সুযোগ থাকলে প্রতিদিন আসতাম।”

হাসিবুল ইসলাম নামে এক বিক্রেতা বলেন, “রোজা উপলক্ষ্যে এই যে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে ইফতারি কিনতে, এটা তো ঐতিহ্যবাহী। এটা সবাই খেতে চান। আমাদের কাছে অনেক ধরনের ইফতারি আছে। এখন পর্যন্ত বিক্রি করে কুলাতে পারছি না। এই ভিড় আরও বাড়বে।”

আকর্ষণীয় সব আইটেমের পাশাপাশি প্রচলিত ইফতারির কদরও অনেক বেশি এই চকবাজারে। ইফতার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জিলাপি কালাই আইটেম ২৪০ টাকা কেজি, আটার জিলাপি ২০০ টাকা কেজি, বড় সাইজের জিলাপি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শিঙ্গাড়া ১৫ টাকা প্রতি পিস, সমুচা ১৫ টাকা, চিকেন টোস্ট ৪৫ টাকা, চিকেন পরোটা ৫০ টাকা, বিফ পরোটা ৬০ টাকা, নরমাল পরোটা ৩০ টাকা, বেগুনি ৫ টাকা, আলুর চপ ৫ টাকা, পেঁয়াজু ৫ টাকা, ভেজিটেবল পাকোড়া ৫ টাকা, ডিমচপ প্রতিটি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঘুগনি ৮০ টাকা কেজি, ছোলা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, সবজির বড়া ১০ টাকা প্রতিটি, গরুর টিকা ৩০ এবং মুরগির টিকা ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জালি কাবাব প্রতি পিস ৫০ টাকা, সাসলিক ৫০ টাকা, টিকা কাবাব ৫০ টাকা, কোয়েল পাখির রোস্ট ৭৫ থেকে ১০০ টাকা, চিকেন রোল ৬০ টাকা, আস্ত মুরগি ৩৫০ টাকা, পনির ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পানীয় আইটেম বিক্রেতা মো. নাজমুল জানান, সবাই চায় মজার ইফতারি করতে। যুগ যুগ ধরে মানুষ পেস্তা শরবতের জন্য পাগল। চকবাজারের খুব জনপ্রিয় আইটেম এটা। ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এছাড়া ফালুদা, বোরহানিসহ কয়েকটি আইটেম বিক্রি করছি। ভালো বিক্রি হচ্ছে। গত দুই বছর কোনো ব্যবসা করতে পারিনি। আশা করছি এ বছর ভালো ব্যবসা করতে পারবো।

Link copied!