সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন মো. আতিক উল্লাহ খান জানিয়েছেন, জাহাজে নাবিকরা সবাই ভালো আছেন। তাদের সাহরি খেতে দিয়েছে জলদস্যুরা।
বুধবার (১৩ মার্চ) ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খানের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো এক অডিও বার্তায় তিনি এ কথা জানান।
ইউ এ খান গণমাধ্যমকে জানান, “ক্যাপ্টেন আতিক উল্লাহ খান অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। অপরিচিত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট থেকে অডিওটা এসেছে।”
তিনি জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত কাউকে শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়নি। গত রাতে সাহরি দেওয়া হয়েছিল। আগামীকাল জাহাজ সোমালিয়ার উপকূলে নোঙর করবে।
তিনি আরও বলেন, জাহাজটির চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন মো. আতিক উল্লাহ ওই অডিও বার্তায় জানিয়েছেন মুক্তিপণ না পেলে জাহাজ ও জিম্মিদের ছাড়া হবে না।
এমভি আবদুল্লাহ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে।
জানা গেছে, নাবিকদের ছাড়তে ‘৫০ লাখ’ মার্কিন ডলার চেয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ না পেলে বাংলাদেশি নাবিকদের মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জাহাজটি প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীকে পাঠানো সর্বশেষ এক অডিও বার্তায় বলেন, “আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না দিলে তারা একে একে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিয়ো।”
দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। পরে বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এটি একটি বাল্ক ক্যারিয়ার।
বাংলাদেশি জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়া নিয়ে যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন (ইউকে এমটিও) তাদের ওয়েবসাইট ও এক্সে (সাবেক টুইটারে) বার্তা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছে। দুটি নৌযানে (একটি বড় ও অপরটি ছোট) চড়ে জাহাজটির কাছাকাছি এসে জলদস্যুরা সেটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।