ব্যাংকিং খাতে গত জুন মাসে ৩১,১৮১ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। যা গত অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং ব্যাংকিং ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, চলতি অর্থবছরের জুন শেষে দেশের ব্যাংকখাতে গ্রাহকের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। যা আগের মাস মে শেষে ছিল ১৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, "আমানত বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো নতুন করে ইন্টারেস্ট যোগ। এছাড়া জুনে বিদায়ী অর্থবছরের মধ্যে সবোর্চ্চ রেমিট্যান্স এসেছে, সেগুলোও টাকায় রূপান্তর হয়ে আমানতে যোগ হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কেটে নতুন করে যে টাকা ইনজেক্ট করছে, সেগুলোও ব্যাংকের আমানত হিসেবে ঢুকছে। যার কারণে ডিপোজিট বাড়ছে। তবে ডিপোজিট বাড়া আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য ভালো। কারণ অনেক ব্যাংক লিকুইডিটি সংকটে রয়েছে।"
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল বছরের নভেম্বর থেকে দেশের ব্যাংকিং খাতের আমানতের প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে। ওই মাসে আমানত কমে ৩,১৫৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেও ব্যাংকিং খাতে আমানত কমে ১,৩৯৮ কোটি টাকা। যদিও তার পর থেকে প্রত্যেক মাসে আমানত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। সর্বশেষ গত এপ্রিলে আমানত বেড়েছে প্রায় ২৪,৯০২ হাজার কোটি টাকা। মে মাসে আমানত বেড়েছে ১৫,৮৮১ কোটি টাকা।
জুনে এসে আমানত বেড়েছে ৩১,১৮১ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে আমানত বাড়ে ৩৪,১৩২ কোটি টাকা- যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, “দেশে গত এক বছরজুড়ে মূল্যস্ফীতি ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে। যে কারণে মানুষের আমানতের টাকা ভেঙে খেতে হয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে আমানতের পরিমাণ আরও বাড়তো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে ২০২২ সালের মে শেষে ব্যাংকের বাইরে টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি। চলতি বছরের মে মাসে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া জুন শেষে এর পরিমাণ দেখা গেছে ২ লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মানি ইনজেক্ট করার কারণে নতুন করে টাকার পরিমাণ বেড়েছে। যা ব্যাংকে নতুন করে যোগ হবে বলেও মনে করেন ব্যাংকাররা।
এদিকে বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষে আমানত এর পরিমাণ বাড়লেও অর্থবছর শেষে ৮.৪৪% প্রবৃদ্ধি নিয়েছে। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হয়েছে ৮.৯০% প্রবৃদ্ধি নিয়ে।