• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হস্তান্তর আজ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৩, ০৮:২৯ এএম
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হস্তান্তর আজ

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠান (গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান) আজ (৫ অক্টোবর) ঈশ্বরদীর প্ল্যান্ট সাইটে অনুষ্ঠিত হবে। এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন। রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভও রূপপুর সাইটে উপস্থিত থাকবেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আলী হোসেন এবং আরএনপিপি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. শওকত আকবর উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান এবং পারমাণবিক জ্বালানির সনদ ও মডেল হস্তান্তরের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সফলভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য প্রস্তুত। অতিথিরা চারটি পয়েন্ট থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ও বক্তৃতা দেবেন।”

দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সরকারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি-ব্যবহারকারী দেশ হতে যাচ্ছে।

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পারমাণবিক জ্বালানির প্রথম চালানটি ২৮ সেপ্টেম্বর একটি বিশেষ ফ্লাইটে এখানে পৌঁছায়।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, সরকার আশা করছে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ও দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে চালু হবে।

প্রকল্পটিতে ৭ হাজার পেশাদারসহ ৩০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। প্রকল্পটি ৬০-৮০ বছর ধরে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে পারমাণবিক ক্লাবে প্রবেশ বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবে। কারণ এটি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। একই সময়ে এটি ফ্ল্যাশের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমিয়ে দেবে।

প্রকল্পের লে-আউটে বলা হয়েছে, আরএনপিপি প্রতিদিন ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক উদ্যোগ নিশ্চিত করবে।

রাশিয়ান ঠিকাদার হিসেবে রোসাটম, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে। বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিটি ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট নিয়ে গঠিত।

মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরমাণু শক্তি কমিশন আরএনপিপি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। রাশিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি অ্যাটমস্টোএক্সপোর্ট  প্রকল্পের অধীনে ১২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে। পারমাণবিক জ্বালানি রোসাটমের সহযোগী কোম্পানি টিভিইএল ফুয়েল তৈরি করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি ক্রয় করে।

ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট অনুসারে পরমাণু শক্তি ব্যবহারকারী দেশগুলির মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ইউক্রেন, জার্মানি, জাপান, স্পেন, সুইডেন, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ভারত, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, পাকিস্তান, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, রোমানিয়া, আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলারুশ, স্লোভেনিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইরান ও আর্মেনিয়া।

একবার পারমাণবিক জ্বালানি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুল্লিতে লোড করা হলে, এক বছরের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে। এর পরে, জ্বালানি চুল্লিতে পুনরায় লোড করতে হবে।

২০২১ সালের অক্টোবরে, ইউনিটের কাঠামোর মধ্যে চুল্লি স্থাপনের মাধ্যমে রূপপুর ইউনিট-১ প্রায় সম্পন্ন হয়। এটি এআইইএর মান অনুযায়ী স্থাপন করা হয়।

চুল্লি একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান উপাদান। গত বছরের অক্টোবরে দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপন করা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সূত্র : বাসস

Link copied!