ভারতসহ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক আশা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।”
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান টেলিফোনে এবং শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়ে আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন। আমার অনুরোধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৭ জন বাংলাদেশি যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন, তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন সে দেশের সরকার। ইতোমধ্যে তাদের কয়েকজন দেশে ফিরে এসেছেন। এই ক্ষমা প্রদর্শন ছিল অতি বিরল একটি ঘটনা। এ জন্য আমি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যে সমস্ত সরকারপ্রধানের সঙ্গে আমার টেলিফোনে যোগাযোগ হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আমরা ভারত এবং অন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে সেই সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে। ভারতের সঙ্গে আমরা ইতোমধ্যে বন্যা মোকাবিলায় উচ্চপর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আলোচনা শুরু করেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমি সার্ক (SAARC) রাষ্ট্র গোষ্ঠী পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছি।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা চাই, আমাদের দেশ যেন একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে সম্মানের সঙ্গে পরিচিত হয়। দেশের পরিকল্পনা যেন দেশের মানুষকেন্দ্রিক হয়, কোনো নেতা বা দলকেন্দ্রিক নয়। আমরা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অহেতুক কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দেখেছি, যেগুলো কখনোই দেশের মানুষের জন্যে ছিল না, বরং এর সঙ্গে জড়িত ছিল কুৎসিত আমিত্ব এবং বিশাল আকারের চুরি।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, “চলমান এবং প্রস্তাবিত সকল উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর যাচাই-বাছাই করার কাজ ইতোমধ্যে আমরা শুরু করেছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর্যায় বিবেচনা করে বাকি কাজে ব্যয়ের সাশ্রয় এমনকি প্রয়োজন বোধে তা বাতিল করার কথা বিবেচনা করা হবে। দেশের মানুষকে আর ফাঁকি দেওয়া চলবে না। কর্মসংস্থান তৈরি করবে এমন প্রকল্পগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার দেবো।”


































