রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির প্রভাবে রাজধানীর মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল প্রায় যাত্রীশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই টার্মিনালের স্বাভাবিক ব্যস্ততা নেই, দূরপাল্লার বাসগুলো যাত্রীর অভাবে টার্মিনালেই দাঁড়িয়ে আছে।
সকাল ৮টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে পার্ক করা আছে বিভিন্ন পরিবহনের বাস। বাসচালক ও শ্রমিকরা যাত্রী ওঠাতে হাঁকডাক করলেও সাড়া মিলছে না। ময়মনসিংহগামী ইউনাইটেড ও বিলাস পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী দেখা গেছে, অন্য পরিবহনগুলোর কাউন্টার প্রায় ফাঁকা।
টার্মিনালের বিশ্রামাগারেও যাত্রী উপস্থিতি নেই বললেই চলে। কেউ কেউ ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছেন, কেউবা ক্লান্ত শরীরে ঘুমাচ্ছেন।
ইউনাইটেড পরিবহনের চালক রিপন মিয়া বলেন, “সাধারণত সকাল ছয়টার পর থেকেই টার্মিনাল জমে ওঠে। আটটার আগেই অন্তত চার-পাঁচটি বাস যাত্রী নিয়ে রওনা দেয়। কিন্তু আজ সকাল আটটা পেরিয়ে গেলেও যাত্রীর দেখা নেই। সকাল থেকে মাত্র একটি বাস ছেড়েছে।”
টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলগামী বাসগুলো সাধারণত বেশি যাত্রী বহন করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালেও বাসগুলো পার্কিং লেনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
বিলাস পরিবহনের চালক এমদাদ হোসেন বলেন, “লকডাউনের কারণে টার্মিনালে যাত্রী কম। তবে মালিকপক্ষের নির্দেশ—বাস রাস্তায় থাকতে হবে, যাত্রী পেলেই ছাড়তে হবে। আজ সপ্তাহের শেষ দিন, তাই বেলা বাড়লে যাত্রী কিছুটা বাড়তে পারে।”
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. জোবায়ের মাসুদ জানান, বৃহস্পতিবার দেশের সব সড়কেই গণপরিবহন চালু থাকছে, তবে নিরাপত্তার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসে আগুন দিয়ে এক শ্রমিককে হত্যার পর থেকেই আমরা বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছি। সকল পরিবহন মালিককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—বাসে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রাখতে হবে এবং টার্মিনালে শ্রমিকরা টহলে থাকবে।”
মহাখালীর কলেরা হাসপাতাল থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত মূল সড়কে দুই সারিতে শতাধিক বাস দাঁড়িয়ে ছিল। অধিকাংশ বাসের ভেতরে চালক ও হেলপারদের বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে।
যাত্রী না থাকলেও পরিবহন শ্রমিকরা আশাবাদী—বিকেলের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।






























