রোজার শুরু থেকেই দেখা যায় রাজধানীর বড় বড় হোটেল, রেস্তোরাঁ কিংবা খোলা জায়গায় নানা রকম ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন দোকানিরা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন অফারে নানা রকম প্যাকেজের কমতি থাকে না সেখানে। আর এসব খাবারের চাহিদাও অনেক। প্যাকেট হাতে নিয়ে টাকা দিয়ে চলে যায় যে যার মতো। তবে, এমন এক হোটেল আছে যেখানে প্যাকেট নিলেও টাকা দিতে হয় না।
অন্যান্য সব হোটেলের মতো চেয়ার, টেবিলে বসে নয়, খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ফুটপাতে বসেই খেতে হয়। টাকা নিচ্ছে না আয়োজকরা। তবে এ খাবারের বিনিময়ে একটা ভালো কাজ করতে হবে। এই শর্তেই মূলত অসহায়, পথশিশু, ছিন্নমূল, ভবঘুরে মানুষগুলোর খাবারের ব্যবস্থা করছেন ‘ভালো কাজের হোটেল’ -এর আয়োজকরা।
তবে যদি কেউ সেদিন ভালো কাজ নাও করে থাকেন তবুও খাবার থেকে বঞ্চিত হতে হয় না। শর্ত হচ্ছে পরের দিন দুইটা ভাল কাজ করতে হবে।
বাবা-মাহীন নয়ন। থাকে ফার্মগেটে। প্রায়ই খেতে আসে এখানে। আজও এসেছে ইফতার খেতে। আজ কী ভালো কাজ করেছে? জানতে চাইলে নয়ন বলে, “এখানে তাদের (ভালো কাজের হোটেলের স্বেচ্ছাসেবক) সঙ্গে কাজ করেছি।”
ভবঘুরে কিংবা মানসিকভাবে অসুস্থ বা যাদের মানুষ পাগল বলে ঢিল ছোড়ে বা লাঠি নিয়ে তাড়া করে তারাও অংশীদার এই ইফতারের। তাদের দেখা যাচ্ছে খাবার সামনে রেখে সময়ের অপেক্ষা করতে। মাগরিবের আজানের পর তারা ইফতার খাবেন।
একটি ভাল কাজ করতে হবে এই শর্তে ভালো কাজের হোটেলের আয়োজকরা রাজধানীর তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার ও কমলাপুরসহ ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ৬টি জায়গায় কোভিডের লকডাউনের সময় থেকে ভালো কাজের বিনিময়ে খাবার দিচ্ছে রাস্তার মানুষদের। কেন এই আয়োজন? এ প্রশ্নের উত্তরে সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক মাহমুদুল হাসান অনিক বলেন, “আমাদের এ কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করা। মানুষ অনেক সময় ক্ষুধায় খারাপ কাজ করে। তাই আমরা তাদের ক্ষুধা কমিয়ে ভাল কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করি।”