• ঢাকা
  • শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
ডিমের বাজার

মুরগির খাদ্যের দাম কমানোর দাবি খামারিদের


বিজন কুমার
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩, ০৯:২৬ পিএম
মুরগির খাদ্যের দাম কমানোর দাবি খামারিদের
কারওয়ান বাজারের ডিমের দোকান। ছবি-সংবাদ প্রকাশ

“২০২১ সালে ৫০ কেজি খাদ্যের দাম ছিল ১৬০০ টাকা। ২০২৩ সালে সেই খাদ্যের দাম ৩৪০০ টাকা। হিসাব করে দেখলে, একটি মুরগি দিনে প্রায় ১২০ গ্রাম খাবার খায়। এর বাইরে বিদ্যুৎ ও শ্রমিক বিল ছাড়াও খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে এক পিস ডিমের উৎপাদন খরচ এখন ১০ টাকা ৫০ পয়সা পড়ে।”

মূল্যবৃদ্ধির বাজারে অস্থিরতা নিরসনে ডিমের দাম নির্ধারণের পাশাপাশি আমদানিরও অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবু স্বস্তি ফিরছে না ক্রেতাদের মাঝে। নির্ধারিত মূল্য ১২ টাকায় ডিম বিক্রি হলেও, এ নিয়ে নানা মত রয়েছে পাইকারি, খুচরা বিক্রেতা ও সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব থেকে বেশি চাহিদা রয়েছে লাল ডিমের। খুচরা বাজারে এই ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪৬ টাকা ৪০ পয়সা।

এদিকে, প্রতি হালি সাদা ডিমের দাম ৪৫ টাকা এবং হাঁসের ডিম ৭০ টাকা। তবে ক্রেতাসাধারণের প্রত্যাশা, প্রতি হালি ডিমের দাম ৪০ টাকা হলেই তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে।

অপরদিকে, পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিমত, ডিমের মূল্য নির্ধারণের আগে কমাতে হবে মুরগির খাদ্যের দাম। আর খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মূল্য নির্ধারণের পর লাভ কমেছে।

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের সামনে ডিমের খুচরা বিক্রেতার দোকানে আলমগির হাওলাদার নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি প্রত্যাশা করে সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বাজারে এসে ডিমের হালি সরকার নির্ধারিত দাম ৪৮ টাকায় কিনেছি। ক্রেতা হিসেবে মনে করি, ৪০ টাকা হালি হলে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতো। সবকিছুর দাম বেশি। ডিমের দাম যখন বেশি ছিল তখন কিনতে পারিনি, এখন কিনতে পারছি।”

কথা হয় শহিদুল ইসলাম ইদ্রিস নামের অপর এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, “সরকার ১২ টাকা ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে। এই দামে শুধু কারওয়ান বাজারেই পাচ্ছি। কিন্তু খুচরা বাজারে বেশি দামে কিনতে হয়। ডিমের দাম ৪০ টাকা করে দিলে, খুচরা বাজারে যদি ৪২ বা ৪৪ টাকাও হয়, তা ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে।”

তেজগাঁওয় বাজারে ডিমের পাইকারি বিক্রেতা। ছবি-সংবাদ প্রকাশ

লাভ কম হওয়ার অভিযোগ করে খুচরা বিক্রেতা হুসাইন বলেন, “ডিমের দাম কমলেও ক্রেতা এখনো কম। আবার দাম নির্ধারণের পর লাভ কমেছে। আড়ত থেকে কিনতে হচ্ছে ১১ টাকা ৬০ পয়সায়। গাড়ি ভাড়া দিয়ে ৭০ পয়সা পড়ে যায়। ১২ টাকায় বিক্রি করে লাভ থাকে ৩০ পয়সা। যে লাভে আমাদের হয় না।”

দীর্ঘদিন পাইকারি ডিমের ব্যবসা করেন মেহেদি হাসান সবুজ। তিনি বলেন, “সরকার যে ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে। সকল পর্যায়ের মানুষদের কথা বিবেচনা করে ঠিক করার দরকার ছিল। যেমন আগে খাদ্যের দাম কমাতে হবে। ২০২১ সালে ৫০ কেজি খাদ্যের দাম ছিল ১৬০০ টাকা। ২০২৩ সালে সেই খাদ্যের দাম ৩৪০০ টাকা। হিসাব করে দেখলে, একটি মুরগি দিনে প্রায় ১২০ গ্রাম খাবার খায়। এর বাইরে বিদ্যুৎ ও শ্রমিক বিল ছাড়াও খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে এক পিস ডিমের উৎপাদন খরচ এখন ১০ টাকা ৫০ পয়সা পড়ে।”

তিনি আরও বলেন, খামারিরা ভোক্তার কাছে সরাসরি ডিম বিক্রি করেন না। অনেক হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে ডিম আসে। আর খামারিও লাভ ছাড়া বিক্রি করবেন না নিশ্চই। আমিও ৪০ পয়সা লাভ ছাড়া ডিম বিক্রি করবো না। আবার, আমার কাছে যে খুচরা বিক্রেতা কিনবে সেও কিছু লাভ করবে। তাদের পরে রয়েছে মহল্লার বিক্রেতারা। তারা কি লাভ ছাড়া ছাড়বে? ফলে ডিম আর ১২ টাকায় বিক্রি সম্ভব নয়। যদি সম্ভব করতে হয়, আর খামারিদের বাঁচাতে হয়, তাহলে আগে খাদ্যের দাম কমাতে হবে এবং সকল পর্যায়ের মানুষের কথা বিবেচনা করতে হবে।” 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!