সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে গালাগালি ও অশালীন আচরণের ঘটনার ভিডিও অপসারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিটিআরসিকে দ্রুত এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
এর আগে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টকে অভিযোগ করা হয়। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রেজিস্ট্রার জেনারেল বিচারকের অভিযোগটি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রেরণ করেন।
হাইকোর্টে পাঠানো আবেদনে বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক কর্তৃক কোর্টে পাঠানো পত্রে জানানো হয়েছে, তিনি গত ২ জানুয়ারি যথাসময়ে বিচার কার্য পরিচালনার জন্য এজলাসে উঠে দৈনন্দিন কার্যতালিকায় নির্ধারিত মামলাগুলো শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
এজলাস চলাকালে বার সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঞা, সম্পাদক প্রশাসন অ্যাডভোকেট আক্কাস আলী, অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামসহ প্রায় আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ জন আইনজীবী আসেন এবং তারা অশালীন ও অসৌজন্যমূলকভাবে তাকে এজলাস থেকে নেমে যেতে বলেন। বারের সভাপতি আদালতকে উদ্দেশ করে উচ্চস্বরে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ সময় আদালতের এজলাসে কোর্ট ইন্সপেক্টর, আদালতের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্য, আদালতের কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থী জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ঘটনাটি ভিডিও করেন। পরে ভিডিওটি তার হস্তগত হয়। তার দরখাস্তের অংশ হিসেবে ভিডিও ক্লিপটি তিনি আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন।
হাইকোর্টে পাঠানো আবেদনে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ অন্যান্য আইনজীবী কর্তৃক এজলাস চলাকালীন সময়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকদের নিরাপত্তা, বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি এবং শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ওই অভিযোগের বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া আবশ্যক।
পরে ওই ঘটনায় ব্রাক্ষণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট আক্কাস আলী ও অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামকে তলব করেন হাইকোর্ট। আদালতে হাজির হয়ে তাদের ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। গত ৫ জানুয়ারি বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসব আদেশ দেন।