• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যাচার করছে বিএনপি’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৩, ০৬:৩২ পিএম
‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যাচার করছে বিএনপি’
ফাইল ফটো

বিএনপি অপরাজনীতির ধারাবাহিকতায় বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়েও ক্রমাগত মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার (৪ অক্টোবর) দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দেশের প্রতিষ্ঠিত আইন ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের দেওয়া দায়িত্বহীন বক্তব্য ও মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা নির্ধারিত বিষয়ে লজ্জাহীনভাবে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। মির্জা ফখরুল ও বিএনপি তাদের চিরাচরিত অপরাজনীতির ধারাবাহিকতায় বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়েও ক্রমাগত সীমাহীন মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশবাসী জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ মানবিকতা ও উদারতা নিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে নিজ ঘরে থেকে দেশের সর্বাধুনিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের ইতিহাসে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর জন্য এমন মানবিকতার উদাহরণ বিরল।”

সেতুমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সেই উদারতাকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম শুধু অসম্মানই করেননি, গোটা বিষয় নিয়ে অত্যন্ত উসকানিমূলক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশের আইন, বিচার প্রক্রিয়া ও সংবিধান সম্পর্কে দায়িত্বহীন বক্তব্য প্রদান করেছে। বিএনপি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য জল ঘোলা করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতিপক্ষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ইতিহাস জানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা অবৈধ ক্ষমতাদখলকারী সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এমনকি খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে তাদের আইনি সুরক্ষা প্রদান করেছিলেন। শুধু তাই নয়, খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদ ও হুদাকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। খুনি খায়রুজ্জামানকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিয়ে পদোন্নতির মাধ্যমে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দিয়েছিল।”

কাদের বলেন, “১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের দিন বেগম খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে আজ অবধি প্রতিহিংসাপরায়ণ ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারা অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিহিংসার রাজনীতি এবং প্রতিপক্ষকে হত্যা করার মতো নিকৃষ্ট মানসিকতা ঐতিহ্যগতভাবেই বিএনপির মতাদর্শ। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। বরং তিনি বারবার বিএনপির প্রতিহিংসা ও আক্রোশের রাজনীতির শিকার হয়েছেন।” 
সেতুমন্ত্রী বলেন, “২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট সরকারের সময় হাওয়া ভবনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধুকন্যাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে গেলে বাসার প্রবেশ পথ তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরও শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও বেগম খালেদা জিয়াকে নিজ বাড়িতে অবস্থান ও উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। এমন মানবিকতার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে দ্বিতীয় আরেকটি নেই।”

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনার বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের বিষয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। শেখ হাসিনা কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন না এবং তার বিদেশ গমনে আদালতের কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞা ছিল না। তিনি সবসময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তার বিরুদ্ধে দাখিল করা সব মামলার জামিন পাওয়ার পর এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতাবলে তার সাজা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাকে আদালতের শরণাপন্ন হতেই হবে। বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারাধীন এবং এ বিষয়ে রাজনীতি করার কারও কোনো সুযোগ নেই।”

Link copied!