• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ মে, ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

যে ১৪টি পণ্য জিআই সনদের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪, ১১:৫৬ এএম
যে ১৪টি পণ্য জিআই সনদের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে
শীতকালে খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে ঘন করে গুড় তৈরি করা, মানুষের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়।

কয়েক বছরে বাংলাদেশের মোট ২১টি পণ্য জিওগ্রাফিক্যাল আডেন্টিফিকেশন (জি আই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে নিবন্ধিত হয়। নতুন করে  আরও ১৪টি পণ্যের জন্য আবেদন জমা পড়েছে। এছাড়া, আবেদনের প্রক্রিয়ার মাঝে আছে আরও দুটি পণ্য।

যদিও কোনো পণ্যের জন্য আবেদন করার মানে এই নয় যে সেগুলো জি আই সনদ পাওয়ার মতো যোগ্য। বা পাওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা পাবে। নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নির্ধারিত হয় যে কোনো পণ্য এই তালিকায় উঠবে।

যাচাই-বাছাইয়ের পর এগুলোর কোনোটি যদি জি-আই সনদ পেয়ে যায়, তাহলে তখন সেগুলো বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি লাভ করবে।

কোন পণ্য কেন জি আই সনদ পায়
কোনো দেশের পরিবেশ, আবহাওয়া ও সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে; সেই সাথে, ভৌগোলিকভাবে ও ঐতিহ্যগতভাবে যে পণ্যগুলোকে ‘নিজস্ব’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, তাহলে সেটিকে ওই দেশের ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

যে সব পণ্য এই স্বীকৃতি পায়, সেগুলোর মাঝে ভৌগোলিক গুণ, মান ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। একটা পণ্য যখন জি আই স্বীকৃতি পায়, তখন সেটিকে বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং করা সহজ হয়। তখন দেশে বিদেশে ওই পণ্যগুলোর একটি আলাদা কদর থাকে। শুধু তাই নয়, সনদ প্রাপ্তির পর ওই অঞ্চল বাণিজ্যিকভাবে পণ্যটি একাধারে উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা পায়।

অন্য কোনো দেশ বা অন্য কেউ তখন আর এই পণ্যের মালিকানা বা স্বত্ব দাবি করতে পারে না।

নিয়ম অনুযায়ী, কৃষিপণ্য, প্রকৃতি থেকে আহরিত সম্পদ ও কুটির শিল্পকে এই সনদ দেওয়া হয়। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যেসব জি-আই পণ্য আছে, সেখানে এর সবগুলো ধরনই রয়েছে।

জি-আই সনদ পাওয়ার আশায় যেসব পণ্য
আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব বিষয়ক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনে’র (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগ (ডিপিডিটি) জি আই স্বীকৃতি ও সনদ দিয়ে থাকে।

ডিপিডিটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যে ১৪টি পণ্যের জন্য আবেদন জমা পড়েছে, সেগুলো হলো-

•    যশোরের খেজুর গুড়
•    নরসিংদীর লটকন
•    নরসিংদীর অমৃতসাগর কলা
•    জামালপুরের নকশীকাঁথা
•    মধুপুরের আনারস
•    সুন্দরবনের মধু
•    মৌলভীবাজারের আগর-আতর
•    রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আম
•    মুক্তাগাছার মণ্ডা
•    রাজশাহীর মিষ্টিপান
•    শেরপুরের ছানার পায়েশ
•    ভোলার মহিষের কাঁচা দুধ
•    গোপালগঞ্জের রসগোল্লা
•    নওগাঁ’র নাগ ফজলি আম
এছাড়া, আবেদনের প্রক্রিয়ার মাঝে আছে আরও দুটি পণ্য। যথা-
•    দিনাজপুরের লিচু
•    টাঙ্গাইলের শাড়ি

জি আই সনদের আবেদন প্রক্রিয়া
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন হয়। এরপর ২০১৫ সালে আইনের বিধিমালা তৈরির পর জি আই পণ্যের নিবন্ধন নিতে আহ্বান জানায় ডিপিডিটি।

আইন অনুযায়ী, ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধনের জন্য কোনো ব্যক্তিসংঘ, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে ডিপিডিটিতে পর্যাপ্ত প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্তসহ আবেদন করতে হয়।

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর সেগুলোকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। কোনো ভুলভ্রান্তি থাকলে আবেদনকারীকে পরিবর্তন বা সংশোধনের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আবেদনপত্রের সঙ্গে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বিবেচনা করার পর সব ঠিক থাকলে সেই জার্নালে প্রকাশ করা হয়। জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার পর কেউ যদি সেই পণ্যের বিরোধিতা করতে চায়, তাহলে তার জন্য সর্বোচ্চ দুই মাস সময় ধরা আছে। এবং এই সবকিছুর সর্বশেষ ধাপ হলো জি আই সনদ বা নিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রাপ্তি।

সূত্র : বিবিসি

Link copied!