• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন গ্রেপ্তার জঙ্গি নেতা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১, ০৭:২৯ পিএম
সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন গ্রেপ্তার জঙ্গি নেতা

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পুরাতন ও বিশ্বস্ত সহযোগীদের নিয়ে একটি গ্রুপ খোলার চেষ্টা করছিলেন গ্রেপ্তার ‘জঙ্গি নেতা’ এমদাদুল হক ওরফে উজ্জল মাস্টার (৫৫)। তিনি নিজেই এই গ্রুপের সমন্বয়ক ও কর্ণধার। পুনরায় সংগঠিত হয়ে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করাই ছিল তার উদ্দেশ্য।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এমদাদুল হককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, তিন লক্ষাধিক টাকা, রাসায়নিক দ্রব্য, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, উগ্রবাদী বই ও লিফলেট জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, জেএমবির সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় চাঙা করতে এবং সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করতে ‘জঙ্গি’রা বিভিন্ন মাধ্যমে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এ জন্য তাদের বিপুল অর্থের প্রয়োজন ছিল। এগুলো তারা বিভিন্ন সময় লুট, ছিনতাই ও ডাকাতির মাধ্যমে সংগ্রহ করছিল। সম্প্রতি ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এমন চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এমদাদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ‘জঙ্গি’ এমদাদুল হক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের র‌্যাবকে জানিয়েছেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, এমদাদুল হক ২০০২ সালে মুক্তাগাছায় সফররত এক জঙ্গি নেতার বয়ান শুনে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন। পরবর্তীকালে শায়েখ আব্দুর রহমানের কাছ থেকে তিনি বায়াত নেন এবং জামালপুরের একটি আস্তানায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সে সময় শীর্ষ জঙ্গি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই ও সালাহউদ্দিন সালেহীনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে এমদাদুল হক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

কমান্ডার মঈন আরও জানান, এমদাদুল হক ২০০৩ সালে মুক্তাগাছা এলাকায় ব্র্যাক অফিসে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার নামে নাশকতা ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা ও ময়মনসিংহে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এছাড়া ২০০৭ সালে নিকটাত্মীয় রফিক মাস্টার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদের জানিয়েছেন।

র‌্যাবের এই পরিচালক আরও জানান, এমদাদুল হক বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেছেন। তিনি আত্মগোপনেও ছিলেন অনেক বছর। ২০১৫ সালে একটি বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৬ সালে তিনি জামিন পান। এরপর আবার আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তিনি ছদ্মবেশে জঙ্গিবাদে সংশ্লিষ্টতা বজায় রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

র‌্যাব আরও জানায়, বিভিন্ন সময় জেএমবির শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড ও কারাদণ্ড হলে সংগঠনটি নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে। ফলে সংগঠনের অন্যরা বিচ্ছিন্নভাবে স্বতন্ত্র কয়েকটি গ্রুপে বিভিক্ত হয়ে জঙ্গিবাদ চালিয়ে আসছিল। তেমন একটি গ্রুপের সমন্বয়ক ও কর্ণধার এমদাদুল হক। তিনি জেএমবির পুরাতন ও বিশ্বস্ত সহযোগীদের নিয়ে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছিলেন। তার গ্রুপে অর্ধশতাধিক অনুসারী রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। গ্রুপটি ময়মনসিংহ, জামালপুর, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।

 

Link copied!