নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণিত হওয়ায় সে সময়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে দায়িত্বে থাকা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ চৌধুরী, এস আই হাবিবুর রহমান ও এএসআই মফিজুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন তা স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ২৮ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এই আদেশ দেন।
আদালতে পুলিশের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির। আর রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
গত ২৮ অক্টোবর হাইকোর্ট যে পাঁচ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী, এস আই হাবিবুর রহমান, এএসআই মফিজুল ইসলাম, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ এবং চৌকিদার আলী আসগর।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
পরে হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী, এস আই হাবিবুর রহমান, এএসআই মফিজুল ইসলাম।
গত বছরের ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর ফুটেজ সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি না তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন আদালত। কমিটিকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
আদালতের নির্দেশে কমিটির প্রধান ছিলেন চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার। সদস্য ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীন এবং জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।
ওই কমিটি আদালতে প্রতিবেদন দেন। ওই সময় প্রতিবেদনে অবহেলা পাওয়ায় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় চৌকিদারের বিষয়ে আদালত যৌক্তিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তদন্ত কমিটি।
এরপর এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৮ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।