• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অনুষ্ঠিত হলো মাতৃভাষার চলচ্চিত্র উৎসব


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম
অনুষ্ঠিত হলো মাতৃভাষার চলচ্চিত্র উৎসব

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউট ও সরকারি গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট যৌথভাবে আয়োজন করেছে মাতৃভাষার চলচ্চিত্র উৎসব। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে বাংলাদেশে নির্মিত বাংলা, চাকমা, মারমা ও গারো ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র।

উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে বিভায়ন চাকমার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বাঁধা। মারমা ভাষায় নির্মিত ডা. মং উষা থোয়াই প্রযোজিত ও প্রদীপ ঘোষ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘গিরিকন্যা’। শরিফুল ইসলাম পলাশ পরিচালিত গারো ভাষায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘নিকমিলমাল’ এবং সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’।

প্রথমেই স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের পরিচালক (একাডেমিক) শারমিনা চৌধুরী। আলোচনা পর্বে বিশেষ সন্মাননা প্রদান করা হয় মারমা ভাষায় নির্মিত দেশের প্রথম চলচ্চিত্র গিরিকন্যা (তংস্মাসে) প্রযোজক মং উষা থোয়াইকে।

আলোচনা পর্বে চিকিৎসক মং উষা থোয়াই বলেন, “বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের এগারোটি ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর মারমা সম্প্রদায় হলো দ্বিতীয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠী। দীর্ঘকাল ধরে তারা পাহাড়ে বসবাস করে আসছে। কিন্তু সময়ের সাথে পাহাড়ের যে পরিবর্তন তা আমি প্রত্যক্ষ করে আসছি। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখেছি তাদের দুঃখ দুর্দশা। দেখেছি প্রাণ প্রকৃতি কীভাবে বিপন্ন হচ্ছে। এ বিষয়কে সামনে রেখে আমি একটি গল্প লিখেছিলাম। পরবর্তীকালে এটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষের সামনে হাজির করেছি।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আকবর খান বলেন, “সরকারি গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট এবং জহির রায়হান ফিল্ম ইন্সটিটিউট যৌথভাবে মাতৃভাষার চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধরণের প্রদর্শনী ছাত্রছাত্রী তথা নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশন পরিচালিত ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক জনাব মৃন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের রয়েছে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার। আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসকে স্মরণ করে আপনারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করছেন তা সত্যি আনন্দের বিষয়। পৃথিবীর এমন অনেক ভাষা আছে যা টিকে থাকতে পারছে না। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ভাষার ব্যবহার হলে ভাষাগুলো টিকে থাকতে পারে বলে আমি মনে করি।”

জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সভাপতি নাট্যজন শংকর সাওজাল বলেন, “প্রতিবছর আমরা ভাষা শহীদের স্মরণে নানা আয়োজন করে থাকি। বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিকদের জাতীয় ভাষা বাংলা হলেও আমাদের ভূখন্ডে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃজনগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব মাতৃভাষা। আমরা মাতুভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃজনগোষ্ঠীর মাতৃভাষাকেও শ্রদ্ধা জানাতে চাই। প্রতিবছর ক্ষুদ্র নৃজনগোষ্ঠীর ভাষার মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে ভাষাভিত্তিক যে বৈচিত্র রয়েছে তা অদূর ভবিষ্যতে ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে।”

Link copied!