• ঢাকা
  • সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২, ১৪ জ্বিলকদ, ১৪৪৪

মাছের চানাচুর


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২১, ১০:৪২ এএম
মাছের চানাচুর

কাজের ফাঁকে বা অবসরে যারা কটমট করে কিছু চিবুতে পছন্দ করেন তাদের কাছে চানাচুর বেশ প্রিয় খাবার। বাজারেও এখন বিভিন্ন স্বাদের চানাচুর পাওয়া যাচ্ছে। তবে মাছের চানাচুর হতে পারে কেউ কখনও চিন্তাও করেনি। যা সত্যিই তৈরি করে দেখালেন বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

ভুল শুনছেন না, এটা সত্যি! মাছ দিয়ে চানাচুর বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই গবেষকরা। কাঁচকি মাছ দিয়ে তৈরি এই চানাচুর স্বাদেও বেশ সুস্বাদু। শুধু চানাচুরই নয়, বাদাম ও তিলের বার বা খাজা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়েছে কাঁচকি মাছ।

যাদের মাছ খাওয়ায় অনিহা রয়েছে তাদের জন্যই এই প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। বিশেষ করে শিশুরা মাছ খেতে মর্জি করে। কিন্তু চানাচুর, তিলের বার, বাদাম কিংবা খাজা এসব খাবার শিশুদের বেশ প্রিয়। তাই এসবের মাধ্যেম প্রাণিজ আমিষের মিশ্রণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই কাঁচকি মাছ দিয়ে নতুন কিছু করার চিন্তা হয়।

মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে শিশুদের প্রাণিজ আমিষ জোগাতে এসব খাদ্যপণ্য তৈরি করেছেন গবেষকেরা।

পুষ্টিবিদেরা বলেন, প্রাণিজ আমিষের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে যেকোনো মাছ অধিক পুষ্টিকর এবং এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কম।

এসব প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য তৈরি করার পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক মো. নূরুল হায়দার ও মো. মোবারক হোসেন। সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের আওতায় এক বছর গবেষণা করে সফল হয়েছেন তারা।

প্রধান গবেষক মো. নূরুল হায়দার বলেন, “চানাচুর বা বারের প্রতি শিশুরা এমনিতেই আকৃষ্ট। তাই এসব পণ্যের সঙ্গে মাছ যুক্ত করায় পুষ্টিগুণ নিঃসন্দেহে বেড়েছে। এতে কিছুটা ভিন্ন স্বাদ পাওয়া যাবে, অন্যদিকে পূরণ হবে আমিষের ঘাটতি।"

অধ্যাপক মো. নূরুল হায়দার বলেন, "কাঁচকি মাছে প্রচুর আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং খনিজ পদার্থ (মিনারেল) আছে। এ মাছের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এটি প্রক্রিয়াজাতকরণের ফলে কাঁটাসহ চিবিয়ে খাওয়া যায়। সব বয়সী মানুষের জন্য এসব পণ্য হতে পারে পুষ্টিকর মুখরোচক খাবার।"

গবেষক জানান, "বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত করায় এসব পণ্যে মাছের গন্ধ থাকে না। ভিন্ন স্বাদের এসব খাদ্যপণ্যের নির্দিষ্ট আর্দ্রতা বজায় রাখা হয়। ভালোভাবে প্যাকেটজাত করলে এগুলো দু-তিন মাস পর্যন্ত খাবার উপযোগী থাকবে।“

এসব খাবার বাণিজ্যিকীকরণের বিষয়ে নূরুল হায়দার বলেন, “আপাতত বাণিজ্যিকীকরণের চিন্তাভাবনা করা হয়নি। কোনো খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান যদি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে চায়, সে ক্ষেত্রে আমাদের গবেষক দল সহযোগিতা করবে।"

Link copied!