মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ও বাম দল কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই) এবং মহারাষ্ট্রের নেতা শারদ পওয়ারের ন্যাশানালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) ভারতে জাতীয় দলের তকমা হারিয়েছে। অন্যদিকে, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) জাতীয় দল হিসাবে পরিগণিত হবে বলে জানিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (১০ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল ও মনিপুর প্রদেশে রাজ্য পর্যায়ের দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় তৃণমূলকে জাতীয় দলের মর্যাদা দিয়েছিল কমিশন। সে সময় লোকসভার ভোটে ৪টি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে ওই রাজ্যের ‘রাজ্য দল’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ৭ বছরের মাথাতেই সেই মর্যাদা হারাতে হল তাদের।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, “এখন এ বিষয়ে কিছু বলছি না। দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর এ বিষয়ে বক্তব্য জানানো হবে।”
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, জাতীয় দল হতে গেলে তিনটি শর্তের অন্তত একটি পূরণ করতে হয়। শর্তগুলো হলো- লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। লোকসভায় ৩টি রাজ্য থেকে অন্তত ১১টি আসন (মোট আসনের ২ শতাংশ) জিততে হবে এবং আগের জেতা আসনের অন্তত চারটিতে পুনরায় জিততে হবে। অন্তত চারটি রাজ্যে ‘রাজ্য দলের’ তকমা পেতে হবে।
গুজরাটের ভোটে এই তৃতীয় শর্তটি পূরণ করতে পেরেছেন কেজরীওয়াল। দিল্লি এবং পঞ্জাবে ক্ষমতাসীন আপ গত ফেব্রুয়ারিতে গোয়ার বিধানসভা ভোটেও ৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল। এর পর ডিসেম্বরে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের বিধানসভা ভোটেও সেই শর্ত পূরণ করে তারা।
যদিও তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা কেড়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা দরবার শুরু করে তৃণমূলও।
তারা দাবি করে, ২০১৬ সালে তৃণমূলকে জাতীয় দলের তকমা দিয়েছিল, তা ২০২৪ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা। ফলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল না দেখে নির্বাচন কমিশন যাতে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়, সেই আবেদন জানিয়েছিল তৃণমূল।
জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোয় বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা বাতিল হতে পারে তৃণমূলের। প্রথমত, কোনো জাতীয় দলের চিহ্নকে দেশের অন্য কোনো রাজ্যে অন্য কোনো দল ব্যবহার করতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয় বাদে মমতার জোড়াফুলের সেই ‘রক্ষাকবচ’ আর থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, দলীয় দপ্তর তৈরি করার জন্য সরকারের থেকে জমি বা বাড়ি পায় জাতীয় দলগুলো অন্য দল তা পায় না। তৃতীয়ত, নির্বাচনের সময় জাতীয় দল সর্বাধিক ৪০ জন ‘তারকা প্রচারক’ ব্যবহার করতে পারে। যেখানে অন্য দলের ক্ষেত্রে সেই সীমা মাত্র ২০ জন।
আপনার মতামত লিখুন :