• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সুইডেনে কোরআন অবমাননা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের নিন্দা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৩, ০৫:১৯ পিএম
সুইডেনে কোরআন অবমাননা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের নিন্দা

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি মসজিদের সামনে বিক্ষোভের নামে এক উগ্রবাদীকে কোরআন পুড়ানোর অনুমতি দেয় দেশটির পুলিশ। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা পবিত্র কোরআন অবমাননার তীব্র নিন্দা করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ‍জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ওই কথিত বিক্ষোভে ৩৭ বছর বয়সী সালওয়ান মোমিকা নামে একজন ইরাকি একাই অংশ নেন। যিনি বেশ কয়েক বছর আগে সুইডেনে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার মুসলমানরা ঈদুল আজহা উদযাপন করার সময় মুসলমানদের পবিত্র এ গ্রন্থের পাতা ছিঁড়ে এবং আগুনে জ্বালিয়ে দেন তিনি।

সুইডেনের পুলিশ দাবি করেছে, বাক স্বাধীনতার বিষয়টি বিবেচনা করে কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকিও তৈরি হবে না বলে দাবি করেছে তারা।

তুরস্ক:

নিন্দা জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান কোরআন অবমাননাকে ‘ঘৃণ্য’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, “এটি একটি হীন কাজ। বাক স্বাধীনতার নামে এ ধরনের ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম হতে দেওয়া এবং এসব হীন কাজের প্রতি চোখ বন্ধ রাখা, এগুলোকে সমর্থন জানানোরই সামিল।”

আর এ ঘটনায় বেজায় ক্ষিপ্ত হয়ে সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদের অনুমোদন দেবে না তুরস্ক।

এদিকে জুলাইয়ে লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে হবে ন্যাটোর বার্ষিক সম্মেলন। এর আগেই সুইডেন তুরস্কের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু কোরআন অবমাননার অনুমোদন দেওয়ায় দেশটির ন্যাটো সদস্যপদ এখন শঙ্কায় পড়ে গেল।

এর আগে গত জানুয়ারি মাসে তুর্কি দূতাবাসের কাছে স্টকহোমে কোরআন পোড়ান একজন অতি-ডান রাজনীতিবিদ। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

মরক্কো:
মরক্কো শুধু নিন্দা জানিয়েই দায় সারেনি। দেশটি সুইডেনে রাষ্ট্রদূতকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রত্যাহার করেছে।

রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাবাতে সুইডেনের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকেও তলব করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র:
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও কোরআন পোড়ানোর বিরোধিতা করেছে। পাশাপাশি তুরস্ককে সুইডেনের ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য অনুমোদন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, “ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো অসম্মানজনক এবং ক্ষতিকর। যা ন্যায় হতে পারে না।”

মিশর:

মিশর বলেছে মোমিকার কাজটি ‘লজ্জাজনক’ ছিল, বিশেষ করে ঈদুল আজহার দিন। মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউরোপে বারবার কোরআন পোড়ানোর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ইরাক:
ইরাক এই কাজটিকে ‘বর্ণবাদী’ এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছে। এছাড়া তারা ‘চরমপন্থি এবং বিক্ষুব্ধ মানসিকতার ব্যক্তিদের দ্বারা পবিত্র কোরআন পোড়ানোর নিন্দাও করেছে।

ইরাকি সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, “তারা শুধু বর্ণবাদীই নয়, সহিংসতা ও ঘৃণার প্রচারও করছে।”

জর্ডান:
জর্ডানও ঘৃণ্য এই কাজের নিন্দা করে একে ‘বর্ণবাদী’ এবং ‘উস্কানিমূলক’ বলে অভিহিত করেছে।

জর্ডান কিংডমের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পবিত্র কোরআন পোড়ানো একটি ঘৃণার কাজ। এটি ইসলামোফোবিয়ার বহিঃপ্রকাশ যা সহিংসতা এবং ধর্মের অবমাননাকে উস্কে দেয়। যা মোটেও মত প্রকাশের স্বাধীনতার একটি রূপ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।

কুয়েত:
কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পবিত্র কোরআন আগুনে পোড়ানো একটি ‘বিপজ্জনক, উস্কানিমূলক’ পদক্ষেপ। যা সারা বিশ্বের মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে।

তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং দেশটির সরকারকে এরকম বিদ্বেষ, চরমপন্থা এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার অনুভূতি পরিত্যাগ করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ইয়েমেন:
ইয়েমেনি সরকার ঘটনাটিকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ চরমপন্থি’ আন্দোলনের দ্বারা বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের অনুভূতিকে ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কে দেওয়া বলে আখ্যায়িত করেছে।

Link copied!