• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২, ০৫ মুহররম ১৪৪৬
এনডিটিভির প্রতিবেদন

চামড়া তুলে ফেলা, হাড়-মাংস টুকরা টুকরা করা, সবকিছু ঘটে ১০ মিনিটে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
চামড়া তুলে ফেলা, হাড়-মাংস টুকরা টুকরা করা, সবকিছু ঘটে ১০ মিনিটে
আনোয়ারুল আজীম। ছবি : সংগৃহীত

১০ মিনিটেরও কম সময়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুন করা হয়। ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে দমদম বিমানবন্দর লাগোয়া নিউটাউনে রহস্যজনকভাবে খুন হয়েছেন তিনি। ১২ মে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে কলকাতা যাওয়ার পরদিন থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। মূলত সেদিনই (১৩ মে) তাকে হত্যা করা হয়। 

নিউটাউনে বহুতল আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে ১৩ মে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট থেকে ১২টা ৫০ মিনিটের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের সময় নেওয়া হয় ১০ মিনিটের কম। কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয় অন্তত পাঁচজন। খুনের পর তার লাশ টুকরো করে চারটি ট্রলি ব্যাগে নেওয়া হয়। এরপর খুনিরা ব্যাগগুলো নিয়ে বিকাল ৫টা ১১ মিনিটে বাসা থেকে একে একে বের হয়ে যায়। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দেশি-বিদেশি চক্রের সদস্যরা জড়িত। এই খুনের ঘটনায় ৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। 

আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হওয়া নিয়ে শুক্রবার (২৪ মে) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এতে আজীমকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার নিথর দেহ নিয়ে যে নির্মমতা ও পৈশাচিকতা চালিয়েছে, কয়েকজন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীর রোমহর্ষক বর্ণনায় উঠে এসেছে।

বিভিন্ন সংস্থার কাছে থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে হত্যার পর বাংলাদেশি এমপির মরদেহ থেকে প্রথমে চামড়া তুলে ফেলা হয়। পরে দেহটি টুকরা টুকরা করা হয়। হাড় ও মাংস আলাদা করার পর মাংস কিমা করা হয়। পরে একাধিক প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে শহরজুড়ে যত্রতত্র অংশগুলো ফেলে দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মুম্বাইয়ে কসাইয়ের কাজে জড়িত অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের নিখুঁত পরিকল্পনা ও মরদেহ নিয়ে পৈশাচিকতা বর্ণনা উঠে আসে। তাকে কলকাতার আদালতে তোলা হয়েছে। 

সিআইডির সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি এমপিকে হত্যা ও তার দেহ টুকরা করার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকার করেছেন জিহাদ।

আনারের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার কসাই জিহাদকে শুক্রবার (২৪ মে) কলকাতার বারাসাত আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 
জানা গেছে পরিকল্পিত নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এমপিকে হত্যার পরে তার শরীর থেকে মাংস এবং হাড় আলাদা করে ফেলে। মূলত পরিচয় নষ্ট করার জন্য এমপির মাংস কিমা করে তা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা হয়। আর হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরা করে নেওয়া হয়। পরে ওই ব্যাগগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে নানা ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ফেলে দেওয়া হয়। 

Link copied!