উত্তর কোরিয়া তার প্রথম সামরিক ‘স্পাই স্যাটেলাইট’ প্রস্তুত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একটি পরিকল্পিত উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার হুমকি মোকাবেলায় মহাকাশে পরিকল্পনা অনুযায়ী স্পাই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ`র খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পরিদর্শন করে কিম বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে আসা ‘হুমকি’ মোকাবেলা করার জন্য গোয়েন্দা সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং এর জন্য বেশ কয়েকটি স্পাই স্যাটেলাইটের প্রয়োজন রয়েছে। এ সময় কিম নির্ধারিত সময়ে স্যাটেলাইট স্থাপনের আহ্বান জানালেও উৎক্ষেপণের তারিখ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
গত বছরের ডিসেম্বরে এই স্পাই স্যাটেলাইটের সর্বশেষ পরীক্ষা (টেস্ট) করা হয়। তখন জানানো হয়েছিল, ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যে উৎক্ষেপণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে তারা।
এদিকে কিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে তাদের (মার্কিন-কোরিয়া) জোটকে শক্তিশালী করার নামে শত্রুতামূলক সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
তিনি দাবি করেছেন যে, মার্কিন বিমানের মতো সামরিক শক্তি মোতায়েন করে ‘দক্ষিণ কোরিয়াকে আগ্রাসনের একটি উন্নত ঘাঁটি এবং যুদ্ধের অস্ত্রাগারে পরিণত করার’ চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার স্পেস এজেন্সিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ওই সময় তিনি স্পেস এজেন্সির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই সময় অনুযায়ী যেন সবকিছু সম্পন্ন করা হয়। এটির পর আরও নজরদারি স্যাটেলাইট তৈরির নির্দেশনাও দেন তিনি।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। তবে এটি কখন মহাকাশে পাঠানো হবে সেটি পরিষ্কার করে জানায়নি সংস্থাটি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ বাড়াতে সম্মিলিত মহড়া বাড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহে দেশ দুটি প্রায় ১১০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে ১২ দিনের একটি মহড়া শুরু করেছে এবং জাপানের সঙ্গে এক দিনের নৌ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মহড়া চালিয়েছে।
জবাবে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে কিম প্রশাসন। উত্তর কোরিয়া ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল।