এল নিনোর প্রভাবে (জলবায়ু পরিবর্তনজনিত) দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চালের উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। এ নিয়ে ব্যাপক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে। একই আশঙ্কার কারণে বাড়ছে চালের দাম।
বিশ্ববাজারে গত ১৫ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে চালের দাম।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীর্ষ উৎপাদক দেশ ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বেড়েছে চালের দাম। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত জুলাইয়ের শেষের দিকে বাসমতি ছাড়া সাদা চালের রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে। এতে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে চালের বিশ্ববাজারে। ভারত সরকার এই পদক্ষেপকে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবেে উল্লেখ করেছে। তবে এই সিদ্ধান্তের কারণে ২০২২ সালের অক্টোবরের তুলনায় বর্তমান সময়ে চালের দর আরও বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
এদিকে খাদ্যবাজারে চালের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিশ্বের কয়েকটি দেশে। বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে চাল অন্যতম প্রধান খাদ্য। বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ দৈনিক ক্যালরির জোগান দেয় চাল। এসব দেশে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি লাগামছাড়াভাবে বাড়তে পারে।
অন্যদিকে থাই রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা সাদা চালের দাম বেড়ে প্রতি টন ৬৪৮ ডলার ছুঁয়েছে। এশিয়ান বেঞ্চমার্ক এই চালের দর ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ।
ভারত ছাড়াও থাইল্যান্ড থেকে বিশ্ববাজারে চালের জোগান কমার আশঙ্কা রয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ কৃষকদের চালের বিকল্প ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করছে। বিশেষ করে এল নিনোর কারণে শুষ্ক মৌসুমে কম পানিতে চাষ হয় এমন শস্য উৎপাদনে দেশটির সরকার কৃষকদের তাগিদ দিচ্ছে। ২০১৫-১৬ কৃষি বছরে থাইল্যান্ডে এল নিনোর প্রভাবে ধানের আবাদ কমে যায়। ওই বছর শেষে দেখা যায়, দেশটিতে আগের বছরের তুলনায় ধান উৎপাদন ১৬ শতাংশ কমেছে। চলতি মৌসুমেও এল নিনোর প্রভাবে ধান উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। থাইল্যান্ডে গত বছরের চেয়ে এ বছর ২৩ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
থাই রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে থাইল্যান্ড ৪৮ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ মাসে ৭ থেকে ৮ লাখ টন চাল রপ্তানি করা হয়েছে। গত বছর চাল রপ্তানি হয়েছিল ৭৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় এর নেতিবচাক প্রভাব পড়ছে চালের বিশ্ববাজারে, যাদের কাছে পর্যাপ্ত চালের মজুত নেই তারাই বেশি শঙ্কিত।











-20251226075252.jpeg)






-20251225102258.jpg)




















