• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ইমরান খানের স্ত্রীর কি আধ্যাত্মিক ক্ষমতা আছে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ০৬:০৬ পিএম
ইমরান খানের স্ত্রীর কি আধ্যাত্মিক ক্ষমতা আছে

প্রচলিত আছে, ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির মেধা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু অনেকেরই ধারণা বুশরার আধ্যাত্মিক ক্ষমতা আছে, যা তাকে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে গেছে। বুশরা বিবি মূলত একজন আধ্যাত্মিক নেতা, তার স্বল্প সংখ্যক অনুসারীকে ধর্মীয় পরামর্শ দেন।

ইমরানের প্রাক্তন দুই স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ এবং রেহাম খানকে টেলিভিশন অথবা ম্যাগাজিনের পাতায় দেখা গেলেও বুশরা পর্দার আড়ালে থাকতেই পছন্দ করতেন।

এমনকি ২০১৮-তে ইমরান খান সংবাদমাধ্যম মেইলকে জানিয়েছিলেন, তিনি বিয়ের পরেই প্রথমবারের মতো তার স্ত্রীর চেহারা দেখেছিলেন। অনেকের মতে, বুশরা বিবি সুফি ঘরানার মানুষ।

১৯৯৫ সালে ৪৩ বছর বয়সে ইমরান বিয়ে করেন ২১ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক জেমিমা গোল্ডস্মিথকে। তিনি ছিলেন সেই সময়ে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তির মেয়ে। তাদের এই সম্পর্ক ৯ বছর টিকেছিল এবং তাদের দুটো ছেলেও আছে।

২০১৫ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে করেন সাংবাদিক এবং বিবিসির সাবেক আবহাওয়া উপস্থাপক রেহাম খানকে। তাদের এই সম্পর্ক এক বছরেরও কম সময় টিকেছিল। তিনি ইমরানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে তাকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনেছিলেন এবং এই নিয়ে একটি আত্মজীবনীও লিখেছেন।

২০১৮ সালে ইমরান খান কোনো ধরনের জাঁকজমক ছাড়াই বুশরা বিবিকে বিয়ে করেন।

ইমরান খানের সঙ্গে ১৩শ শতাব্দীর একটি সুফি মঠে বুশরা বিবির পরিচয় হয়। সেই সময় বুশরা তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন এবং তার পাঁচটি সন্তান ছিল।

গুঞ্জন আছে, বুশরা বিবি স্বপ্নে দেখেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ইমরানের একমাত্র উপায় হল তাকে বিয়ে করা। তাই তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং তার ছয় মাস পরেই ইমরান খান দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন।

বুশরা বিবি ২০১৮ সালে টেলিভিশনে দেওয়া তার একমাত্র সাক্ষাৎকারে এটিকে একটি ফালতু গল্প বলেছিলেন। কিন্তু তিনি সাংবাদিককে এটিও বলেছিলেন, পাকিস্তানের ইমরান খানের নেতৃত্বে দ্রুতই উন্নতি ঘটবে।

কিন্তু সেরকম ঘটেনি কারণ ইমরানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশটির অর্থনীতির পতন ঘটে, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জেলে নেওয়া হয়, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পায়।

রাজনীতিতে ইমরান খান সাফল্য পেয়েছিলেন তার উদারনীতির জন্য। পাশাপাশি ইসলামিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর পাশাপাশি তার পশ্চিম বিরোধী মনোভাব তাকে এই সাফল্য এনে দিয়েছিল। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তাদের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

২০২২ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। একই বছর অনেকগুলো মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়।

এখন পাকিস্তানের সাবেক ফার্স্ট লেডি বুশরা বিবিকেও তোশাখানা মামলায় জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আছে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের তথ্যমতে, বুশরার প্রাক্তন স্বামী খাওয়ার মানেকা তার বিরুদ্ধে গত বছরের নভেম্বরে ‍‍`প্রতারণামূলক বিয়ে এবং ব্যভিচার‍‍` করার অভিযোগ এনেছিলেন।

ব্যভিচারের অভিযোগ আদালত খারিজ করে দিলেও প্রতারণামূলক বিয়ের অভিযোগে মামলা এখনো বিচারাধীন।

মুসলিম শরিয়াহ আইন অনুযায়ী কোনো নারী স্বামী মারা যাওয়ার পরে অথবা তালাকের পরে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পুনরায় বিয়ে করতে পারেন না। আদালতের অভিযোগে বলা হয়, খাওয়ার মানেকার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার আগেই বুশরা ইমরানকে বিয়ে করেছেন। তবে ইমরান ও বুশরা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

এদিকে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ইমরান খান এবং বুশরা বিবি দম্পতিকে রাষ্ট্রীয় উপহার বেআইনিভাবে বিক্রির মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে দুবাইতে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি করার জন্য এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। রয়টার্সের তথ্যমতে, এই উপহারগুলোর মূল্য প্রায় ১৪ কোটি রুপি।

ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটআই) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং আইনজীবী গহর আলী খান বলেছেন, বুশরা বিবিকে সাজা দেওয়া হয়েছে ইমরান খানকে চাপে ফেলার জন্য। একটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে তিনি বলেছেন, এই মামলার সঙ্গে বুশরা বিবির কোনো সম্পর্ক নেই।

পাকিস্তানের সরকার জানিয়েছে, আদিয়ালা জেল থেকে বুশরা বিবিকে ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে তার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বর্তমানে বাড়িতে সাজা ভোগ করছেন।

তোশাখানা মামলায় কারাদণ্ড পাওয়ার পর ইমরান ও বুশরার বাসভবনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সাব-জেল’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, নতুন কোনো নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত বুশরাকে ইসলামাবাদের এই বাড়িতে গৃহবন্দী থাকতে হবে।

Link copied!