• ঢাকা
  • সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ৯ সফর ১৪৪৬

যে দেশে রয়েছে চায়ের লাইব্রেরি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২২, ০৯:২৫ পিএম
যে দেশে রয়েছে চায়ের লাইব্রেরি

চা এখন আমাদের জন্য খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। আমরা এতোটা চা’ময় পরিবেশে বাস করি যে, চা নিয়ে কোনো ব্যপারে আমরা তেমন আশ্চর্য হই না। তবে চা নিয়েও আশ্চর্য করার মতো বিষয় আছে।

পৃথিবীতে একটি জাতি আছে, যারা চা অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই ভালোবাসে। তাদের চা খাওয়ার রীতিটাও অন্যদের থেকে আলাদা। আবার তারা চা উৎপাদনও করে অনেক বেশি। পৃথিবীর মোট চায়ের ১০ শতাংশই তারা উৎপাদন করে। তবে তারা এতো পরিমাণ চা খায় যে, রপ্তানির জন্য আর বেশি কিছু বাকি থাকে না।

এই জাতি নিয়ে যে দেশ তার নাম হলো তুরস্ক। তারা একটি জাতের চা বেশি উৎপাদন করে। এই জাতটি তুরস্কে সবচেয়ে ভালো জন্মায়। আমরা সেই জাতটিকে জানি ব্ল্যাক টি হিসেবে।

চায়ের এই বিশেষ জাতকে উপভোগ করতে তাদের আছে চা বানানোর বিশেষ পদ্ধতি এবং আলাদা ধরণের চায়ের কাপ। ফলে সব মিলিয়ে তুরস্কে চা খাওয়া সামাজিকভাবে একটি নান্দনিক জায়গা দখল করে নিয়েছে।

তুরস্ক চা খাওয়া শিখেছে ষোড়শ শতাব্দীতে, অটোমান আমলে। যদিও তখন এতোটা জনপ্রিয় ছিল না লাল রঙের এই উষ্ণ পানীয়টি। ১৯০৯ সাল থেকে সারা দেশে চায়ের আবাদ করলেও ফলন ভালো ছিল না। পরে তারা আবিষ্কার করল, কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের পাহাড়ে চা ভালো জন্মাচ্ছে। তুরস্কে প্রথম চা কারখানা স্থাপন করা হয় ১৯৪৭ সালে।

চা পান তুরস্কে তুলনামূলক নতুন হলেও, দেশটির সংস্কৃতিতে চা খুব তাড়াতাড়ি মিশে গেছে। তুরস্কে চায়ের জনপ্রিয়তা ও চা খাওয়ার শৈলী দেখে মনে হবে হাজার বছর এর ইতিহাস। এখন তো তাদের চা লাইব্রেরিও আছে। সেখানে শুধু চা নিয়েই বই আছে ৯৩৮ টি।

তুরস্কে প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ টন চা উৎপাদন হয়। দেশটির সাড়ে ৮ কোটি মানুষ প্রতিদিন গড়ে চার কাপ চা পান করে। আর মাথাপিছু বার্ষিক চা প্রয়োজন হয় প্রায় চার কেজি। ফলে ব্রিটিশ ও চাইনিজরা চায়ের ইতিহাস লিখলেও, কিছু হিসাবে তুর্কিরাই সবচেয়ে বেশি চা পান করা জাতি।

তারা চা বানায় দুতলা কেটলিতে, অনন্য একটি পদ্ধতিতে। সেই পদ্ধতিতে উপরের ছোট কেটলিতে থাকে লিকার আর নিচের কেটলিতে শুধু গরম পানি। ফলে তাদের বানানো চা সরাসরি আগুনের সংস্পর্শে আসে না। যা চায়ের স্বাদে যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। পাশাপাশি গরম চা উপভোগের জন্য আছে টিউলিপ আকৃতির কাপ।

সব মিলিয়ে চা আর শুধু চা নেই সেখানে। চা হয়ে গেছে তুরস্কের সংস্কৃতির অংশ। এই চা একসঙ্গে বেঁধে রেখেছে তুরস্কের সমাজকে। ফলে চায়ের গুণগত মান রক্ষা করতে তাদের চেষ্টার কমতি নেই। সেখানকার ৪৫ টি কারখানার চা উৎপাদকরা চেষ্টা করছেন, তুরস্কের চা যেন একদিন পুরো বিশ্বে তুরস্কের সংস্কৃতির মতোই অনন্য হয়ে ওঠে।

Link copied!