• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

তাইওয়ানকে ঘিরে তিনদিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩, ১০:৪৪ এএম
তাইওয়ানকে ঘিরে তিনদিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন

চীনের কড়া হুশিয়ারি উপেক্ষা করে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সাথে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বৈঠক করেছেন। এরপর থেকেই তাইওয়ান প্রণালীজুড়ে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এবার তাইওয়ানকে ঘিরে তিনদিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এদিকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন ১০ দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরেছেন।

শনিবার (৮ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে। চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি’র (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে জানিয়েছে, শনিবার শুরু হওয়া এ মহড়া আগামী সোমবার (১০ এপ্রিল) পর্যন্ত চলবে।

ইউনাইটেড শার্প সোর্ড নামে অভিহিত এ মহড়াটি তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব সীমান্তের জলরাশির আকাশসীমায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পিএলএ’র ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল শি ইয়ি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পিএলএ জানিয়েছে, “এ মহড়া তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী, বহিরাগত শক্তির যোগসাজশ এবং উস্কানির জন্য একটি সতর্কতা। এটি জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।”

এর আগে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, তাদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কাছে একটি সাবমেরিন–বিধ্বংসী চীনা হেলিকপ্টার এবং তিনটি যুদ্ধ জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) এমন দাবি করেছে দেশটি। এছাড়া তাইওয়ানের কাছে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী ‘শানডং’ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে মহড়ায় নিযুক্ত করেছে চীন।

গত বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসে ম্যাকার্থির সঙ্গে সাইয়ের দেখা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে চীনের যুদ্ধবিমান বহনকারী একটি রণতরীকে তাইওয়ানের দক্ষিণ-পূর্ব জলসীমার মধ্য দিয়ে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে যেতে দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “চীন সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে রক্ষা করতে কঠোর ও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেবে।”

এদিকে চীন দ্বিতীয় দিনের মতো তাইওয়ান সীমান্তের কাছে যুদ্ধজাহাজ ও উড়োজাহাজ মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে কিছু নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাইওয়ানের দূত সিয়াও বি-খিম ও তার পরিবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চীন। এমনকি সিয়াও কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। চীন একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হাডসন ইন্সটিটিউট এবং রোনাল্ড রিগ্যান লাইব্রেরিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। বেইজিং বলেছে, মার্কিন এই দুই প্রতিষ্ঠান সাইকে ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’ কার্যক্রমের জন্য মঞ্চ ও সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।

তবে চীনের দাবি, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় পরিচালিত তাইওয়ান তাদের ভূখণ্ডের অংশ। ‘এক চীন’ নীতির অধীন একদিন তারা এই অঞ্চলকে নিজেদের সঙ্গে একীভূত করবে। উল্লেখ্য, ‘এক চীন’ নীতির কারণে কোনো দেশ একসঙ্গে বেইজিং এবং তাইপের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে না।

গত বছরের আগস্টের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি যখন তাইওয়ান সফর করেন, সেসময়ও তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালায় চীনের সামরিক বাহিনী। এবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্র সফরের শেষে মহড়া চালাচ্ছে চীন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট এবার ক্যালিফোর্নিয়ায় গিয়ে মার্কিন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে বৈঠক করেন।

Link copied!