• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক আজ, যোগ দিয়েছেন বিশ্বনেতারা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৩, ১১:০৯ এএম
রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক আজ, যোগ দিয়েছেন বিশ্বনেতারা

যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আজ শনিবার (৬ মে) সকালে ৪০তম রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হবেন তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। চার্লস একই সঙ্গে কমনওয়েলথভুক্ত আরও ১৪টি দেশেরও রাজা হচ্ছেন আনুষ্ঠানিকভাবে। ইতোমধ্যে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডন পৌঁছেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। গত ৭০ বছরের মধ্যে ব্রিটেনে এটি বৃহত্তম অনুষ্ঠান।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা পৃথক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। ৭৪ বছর বয়সী চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলাকে সেইন্ট এডওয়ার্ডের ঐতিহাসিক রাজমুকুট পরানো হবে। সোনার এ মুকুটটি টাওয়ার অব লন্ডনের বাইরে আনা হয় না। রাজা এক ঘণ্টার কম সময় এটি পরে থাকবেন। এক হাজার বছর পুরোনো ধর্মীয় ও ঐতিহ্য বজায় রেখে তাদের সিংহাসন আরোহণ হবে। এরপর একটি আড়ম্বরপূর্ণ শোভাযাত্রা আয়োজন করা হবে।

এই অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঐতিহাসিক প্যারেডে অংশ নেবেন নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য। রাইফেল, তলোয়ার, পতাকা হাতে মহড়ার কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কমনওয়েলথভুক্ত নিউজিল্যান্ড, ব্রুনেই, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকেও এসেছে সেনারা। অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে বাকিংহাম প্যালেস।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন রাজা তৃতীয় চার্লস। রাজ্যাভিষেক প্রয়োজনীয় না হলেও এর প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে। ১৯৫৩ সালের পর ব্রিটেনের প্রথম রাজ্যাভিষেকের প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে। ওই সময় চার্লসের মা রানি এলিজাবেথকে রাজমুকুট পরানো হয়েছিল।

রাজপরিবারের ভক্তরা দ্য মল নামের প্রশস্ত পথে জড়ো হচ্ছেন। এই পথটি বাকিংহাম প্যালেসে পৌঁছেছে। শনিবারের আয়োজনকে ঘিরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা লন্ডনে হাজির হয়েছেন।

মার্কিন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে টুইটারে লিখেছেন, ঐতিহাসিক মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করা গর্বের বিষয়।

বিশ্বনেতাদের মধ্যে থাকছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং প্রমুখ। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেতিসিয়া, যুবরাজ ফ্রেদেরিক এবং ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্সেস মেরিসহ বিভিন্ন দেশের রাজপরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এর আগে চার্লস কমনওয়েলথ অব নেশনের নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। স্বেচ্ছাসেবী এই সংস্থাটি ৫৬টি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত। এটির প্রধান হলেন ব্রিটিশ রাজা। অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ যে ১৪টি দেশের তিনি রাজা সেসব দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানাবেন তিনি।

শনিবার রাজ্যাভিষেকে রাজা চার্লসের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার ঘোষণা করবেন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতারা।

সোনার এ মুকুটটি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি, ৩৬০ বছরের পুরোনো। লম্বায় ৩০ সেমি বা এক ফুট। এর ওজন প্রায় ৫ পাউন্ড বা সোয়া দুই কেজি। এ মুকুটে ৪৪৪টি রত্ন রয়েছে, যার মধ্যে আছে বহু মূল্যবান স্যাফায়ার, রুবি, অ্যামেথিস্ট এবং টোপাজ। এদের বেশির ভাগই হালকা নীল বা নীলচে সবুজ রঙের।

এনামেল ও স্বর্ণের খোপে বসানো হয়েছে এসব রত্ন। একসময় মুকুটের এসব রত্ন খুলে আলাদা করা যেত এবং অভিষেকের সময় সেগুলো নতুন করে বসানো হতো। কুড়ি শতকেই এসব রত্ন মুকুটে স্থায়ীভাবে বসিয়ে দেওয়া হয়।

Link copied!