মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশি নারীকে তার প্রেমিকের পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগে আদালতে হাজির করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দেশটির জোহর প্রদেশের আদালতে তাকে তোলা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত নারী বেগম মাসুমা একটি উৎপাদন কারখানায় কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তার প্রেমিক বাবু মণ্ডল (৩৩)-এর শরীরে গুরুতর আঘাত করেন। পুলিশ জানায়, ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরিটি ছিল প্রাণঘাতী অস্ত্র।
গত ৮ অক্টোবর ভোররাতে জোহরের গেলাং পাতাহ এলাকার একটি কারখানার পেছনের বস্তিতে তাদের ভাড়া করা বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় গণমাধ্যম কসমো ৯ অক্টোবর এক প্রতিবেদনে জানায়, চরম ঈর্ষা থেকেই মাসুমা তার প্রেমিকের ওপর এই হামলা চালান। কারণ, তিনি জানতে পারেন বাবু মণ্ডলের বাংলাদেশে আরও একজন স্ত্রী রয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর পুরো মালয়েশিয়াজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে বেগম মাসুমা মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, পাশাপাশি জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন।
আদালতে উপস্থিতির সময় তার কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি নেওয়া যায়নি, কারণ তিনি অভিযোগের ভাষা পুরোপুরি বুঝতে পারেননি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জুহাইনি জুল কাফলি আদালতে জানান, অভিযুক্ত একজন বিদেশি নাগরিক, যার বৈধ কোনো অভিবাসন নথি নেই। অপরাধটি গুরুতর এবং ভুক্তভোগী তার প্রেমিক—এই তিন কারণে মামলাটি জামিন অযোগ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে বেগম মাসুমাকে বিনা জামিনে আটক রাখার নির্দেশ দেন এবং মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ১১ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। সে সময় আদালত একজন বাংলাদেশি দোভাষী নিয়োগের নির্দেশ দেন, যাতে অভিযুক্ত নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বুঝতে পারেন।
এর আগে একই দিনে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বেগম মাসুমার বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগও আনা হয়। তদন্তে জানা গেছে, তিনি কোনো বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়াই দেশে প্রবেশ করেছিলেন।
এই অপরাধের জন্য দেশটির আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা, অথবা উভয় শাস্তিই হতে পারে।
ম্যাজিস্ট্রেট আতিফাহ হাজিমাহ ওয়াহাব তার কাছ থেকেও কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেননি, কারণ অভিযুক্ত অভিযোগের ভাষা বুঝতে সক্ষম ছিলেন না।