ইরান সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন লেবানন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চুক্তি অনুমোদনের প্রস্তাব ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
এদিকে লেবানন পার্লামেন্টের ডেপুটি-স্পিকার ইলিয়াস বোসাব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে বড় কোনো বাধা নেই।
এর আগে, সোমবার জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন জানান, চুক্তি বিষয়ক আলোচনায় বেশ অগ্রগতি এসেছে।
এদিকে লেবাননের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধবিরতির চুক্তি হতে পারে।
এর আগে, রোববার লেবাননে হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতিতে নীতিগত অনুমোদন দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সূত্রের বরাতে এ তথ্য দেয় মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। অবশ্য, দুই পক্ষের আলোচনার মধ্যেই লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। পাল্টা হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহও।
এদিকে, ৪টি সিনিয়র লেবানিজ সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিদ্যমান পরিকল্পনার অধীনে আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্র জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ নভেম্বর) পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলার বলেন, “যদিও আমরা এখনো কোনো চুক্তি করিনি, তবে আমরা একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি রয়েছি। আমাদের দ্বিমতের জায়গাগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রগতি করেছি, যদিও এখনও কিছু পদক্ষেপ বাকি রয়েছে, যেগুলোতে আরও কাছাকাছি আসতে হবে। আমরা আশা করছি শিগগিরই সেগুলোও আমরা অর্জন করতে পারব।”
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত লেবানিজ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে লড়াই শেষ করতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং ওই এলাকায় হিজবুল্লাহর উপস্থিতির অবসান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েল–হামাসের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা শুরু করে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এরপর লেবাননে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এমনকি লেবাননের ভেতরে স্থল অভিযানও শুরু করেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত এক বছরে লেবাননে মোট নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৬৮ জন এবং আহতের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি।






































