দেশে মরণব্যাধি ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতিবছর ৮২ লাখ মানুষ ক্যানসারে মৃত্যুবরণ করে। বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি নারী ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত হন। আশঙ্কাজনক খবর হলো, দ্বিতীয় এ মরণব্যাধিতে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক।
মেয়েদের মধ্যে স্তন ক্যানসার এবং ছেলেদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারের প্রবণতা অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হারে ক্যানসার ছড়াতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতি ঘরে একজন করে ক্যানসার আক্রান্ত থাকবেন।
ক্যানসার কোনো নির্দিষ্ট কারণে হয় না। বরং এটি ‘মাল্টি ফ্যাকেটেরিয়াল ডিজিজ’। সমীক্ষা বলছে, অতিরিক্ত বাইরের খাবার, তেল-মসলাদার খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও ময়দা খেলেও ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। শরীরের যেকোনো কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই ক্যানসারের অন্যতম কারণ। শরীরের ওজন ঠিক রাখতে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে আমাদের খাবারে তালিকায় কিছু খাবার অতি জরুরি।
জেনে নেওয়া যাক ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কোন ধরনের খাবার খাবেন সে সেম্পর্কে।
গ্রিন টি
ইজিসিজি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টি শরীরে প্রদাহ রক্ষা দমন করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও কোষের সুরক্ষাও প্রদান করে গ্রিন টি।
মাশরুম
অনেক মেডিকেল পত্রিকাতে, মাশরুমকে ক্যানসার প্রতিরোধের একটি অন্যতম খাদ্য হিসাবে ধরা হয়েছে। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন খেতে পারেন মাশরুম। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বৃদ্ধি করতেও মাশরুম প্রভূত সাহায্য করে।
কোলিন-সমৃদ্ধ শাকসবজি
ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সর্ষে শাক, মুলা ইত্যাদি কোলিন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ শাকসবজি। এই সবজিগুলোকে ক্যানসারবিরোধী সবজি হিসাবে গণ্য করা হয়। তাই খাবারের তালিকা এই খাবার রাখুন।
সবুজ সবজি গ্রহণ করুন
বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। শীতকাল সবজির জন্য সবচেয়ে ভালো সময়। পালং, মেথি ইত্যাদি আপনার খাদ্যতালিকায় প্রতিদিনই রাখতে পারেন। স্যুপ, রুটি-পরোটা এবং ডাল তৈরিতে এসব সবজি ব্যবহার করতে পারেন। তাজা সুবজ সবজি ক্যানসারের উপাদানগুলোর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
হয়ে উঠুন নিরামিষভোজী
গরু, খাসি বা লাল মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের মাংসগুলো ক্যানসার তৈরিতে সাহায্য করে। সম্প্রতি গবেষণায় বলা হয়, মাংস খাওয়া বাদ দিয়ে খাদ্যাভ্যাসে যদি প্রচুর পরিমাণ সবজি রাখা যায় তবে সেটি ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া বেশি পোড়া খাবারও এড়িয়ে চলুন।
ভেষজ খাবার
কিছু ভেষজজাতীয় খাবারে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যানসারের কোষ ঝিল্লি তৈরি বন্ধ করতে কার্যকরী। ভেষজ জাতীয় খাবার যেমন অশ্বগন্ধা, তুলসী, ত্রিফলা ইত্যাদি। তাই এ ধরনের খাবারের অভ্যাস করতে পারেন।
এপিজেনিন সমৃদ্ধ খাবার
চেরি, আঙুর, ধনে পাতা, পার্সলে পাতা, আপেল, ভালো মানের, রেড ওয়াইন ইত্যাদি এপিজেনিন যৌগসমৃদ্ধ খাবার স্তন, প্রস্টেট ক্যানসার, ফুসফুস, ত্বক বা কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা কমায়।
কিউয়ি
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কিউয়ি ডিএনএ মেরামত করতে বিশাল ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে কেমোথেরাপির পর কিউয়ি শরীরের জন্য বেশ অপরিহার্য। সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য তালিকায় রাখুন কিউয়ি।
সূত্র: আনন্দবাজার