বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না মাদক মামলায় গ্রেপ্তার চিত্রনায়িকা পরীমনির। চার দিনের রিমান্ডের শুরুর দিনই গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার তথ্য দেন তিনি। মাঝে মাঝে নাকি ঘুরতে বের হতেন। শুধু তা-ই নয়, সময় পেলেই একান্তে সময় কাটাতেন তারা। কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট হয়েছে সাকলায়েনের বাসায় ১৮ ঘণ্টা সময় কাটান এই অভিনেত্রী।
সেই ভিডিওর রেশ কাটার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন একটি ভিডিও। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে বিতর্কিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপলোড করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, জন্মদিনের পার্টিতে পরীমনি ও সাকলায়েন কেক কাটছেন।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, তারা একে অপরকে কেক মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া একটি কেকের খণ্ড মুখে নিয়ে সাকলায়েনের মুখে তুলে দেন পরীমনি। এরপর তারা দুজন ‘হ্যাপি বার্থডে’ গান গেয়ে জন্মদিন উদ্যাপন করেন।
ভিডিও প্রকাশের পর সবার একটাই প্রশ্ন, মামলা চলাকালে কীভাবে ব্যক্তিগত ভিডিও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিতর্কিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনের কাছে পৌঁছাল? এ ক্ষেত্রে কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে আঙুল তুলছেন। ধারণা করছেন, তাদের ভেতর থেকে কেউ ভিডিওটি পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলামের। তিনিও নিজেও ভিডিওটি দেখেছেন। তবে কীভাবে ভিডিওটি তার কাছে পৌঁছাল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারলেন না তিনি।
ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, “ব্যক্তিগত ভিডিও ফাঁস করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ইলিয়াস হোসেন কীভাবে ভিডিওটি পেয়েছেন, আমার জানা নেই। যেহেতু এটি পরীমনি ও সাকলায়েনের একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও তাদের মোবাইলেই থাকাটা স্বাভাবিক। তারাই হয়তো কাউকে দিয়েছিলেন।”
কিন্তু পরীমনির মোবাইল তো এখন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে। সেখানকার কেউ এর পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছেন কি না, জানতে চাইলে ইফতেখায়রুল বলেন, “পরীমনিকে প্রথমে র্যাব অভিযান চালিয়ে আটক করে। তারপর তাকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। এখন তিনি সিআইডির অধীনে। সুতরাং তার মোবাইল বিভিন্ন হাত ঘুরেছে, তাই কোথা থেকে কী ঘটেছে, তা বলা মুশকিল।”
তবে ইফতেখায়রুল ইসলাম জানালেন, পরীমনি চাইলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বলেন, “পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা তখনই নিতে পারবে, যখন পরীমনি অভিযোগ জানাবেন। তিনি যদি অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখব।”
এর আগে ৪ আগস্ট পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণ মাদকসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সেই রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হলে সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।